বৃহস্পতিবার

১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩ পৌষ, ১৪৩২

সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে ব্যাটারদের সাহস জোগাচ্ছেন বোলাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:২৭

আপডেট: ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:৩৬

শেয়ার

সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে ব্যাটারদের সাহস জোগাচ্ছেন বোলাররা
ছবি- বিসিবি

চট্টগ্রাম টেস্টের আগে যেন নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন লিটন দাসরা। গতকাল সারাদিন কোনো অনুশীলন নেই, মিডিয়াতেও উপস্থিতি নেই। বিসিবির মিডিয়া গ্রুপে শুধু জানিয়ে দিয়েছেন ‘আজ কোনো কার্যক্রম নেই।’ হোটেল রুমের দরজায় যেন ‘নো ডিস্টার্ব’ টানানো! কিন্তু এমন নির্জনতার মধ্যেও কি শান্ত থাকতে পারছেন অধিনায়ক লিটন দাস?

পূর্বের ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে শামীম হোসেনকে নিয়ে তাঁর মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা। কেউ বলছেন, অধিনায়ক ঠিকই বলেছেন; আবার কেউ মনে করছেন, সবার সামনে কোনো সতীর্থকে এভাবে নাম ধরে সমালোচনা করা উচিত হয়নি।

সিরিজের শুরুতে লিটন চেয়েছিলেন চাপটা যেন বোলারদের কাঁধে থাকে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে চিত্রটা পুরো উল্টো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ছয় ব্যাটার মিলে করেছেন মাত্র ৬২ রান, যেখানে পাঁচ বোলার নিয়েছেন ৮৭ রান! তাই আজ চট্টগ্রামে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে ব্যাটারদের অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন বোলাররাই।

তানজিম হাসান সাকিবের কথায় তা স্পষ্ট, আমরা দেশের বাইরে এত সিরিজ জিতেছি, এখানে পারব না কেন? এই মাঠ তো আমাদের চেনা, বিপিএলেও ১৮০-২০০ রান হয় এখানে।

তবে তাঁর এই আত্মবিশ্বাস কতটা ছুঁয়ে যাবে ব্যাটারদের, তা এখনই বলা কঠিন। কারণ, শুধু এই সিরিজ নয়, সাম্প্রতিক সময়েও রান তাড়া করতে গিয়ে বারবার ভেঙেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে ১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে থেমেছিল ১২৭-এ, পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩৫ রানের জবাবে ১২৪। সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও ১৬৫ রান তাড়া করতে নেমে গুটিয়ে গেছে ১৪৯ রানে।

আজকের ম্যাচে তাই একাদশে পরিবর্তন আসা প্রায় নিশ্চিত। জাকের আলী খেলবেন, তবে কাকে বাদ দিয়ে—সেটিই এখন আলোচনার বিষয়। শেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে শূন্য হাঁকানো শামীম হোসেন কি বিশ্রাম পাবেন, নাকি বাদ পড়বেন নুরুল হাসান সোহান? যদিও শামীমের প্রতি আস্থা রেখেই তাঁকে হয়তো আরেকটি সুযোগ দিতে পারেন লিটন।

টানা চার সিরিজ জয়ের পর ঘরের মাঠে এই সিরিজ হাতছাড়া করার চিন্তাই করছেন না দলের কেউ। ওপেনিংয়ে তানজিদ ও সাইফ পেয়ে থাকেন ‘ফ্রি লাইসেন্স’—তারা খোলামেলা খেলেন, ঝুঁকিও থাকে সেখানেই। পরিস্থিতি বুঝে লিটন নিজেও হাত খোলেন মাঝেমধ্যে। তবে মিডল অর্ডারে তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন ও নুরুল হাসানের মধ্যে অন্তত একজনের কাছ থেকে অ্যাঙ্করিং ইনিংস আশা করছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

এরই মধ্যে ক্যারিবীয় কোচ ড্যারেন স্যামি ধরেছেন বাংলাদেশের ব্যাটারদের দুর্বলতা—স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেওয়ার প্রবণতা। প্রথম ম্যাচেই তিনি সব ওভারে ওই জায়গায় ফিল্ডার দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন।

অন্যদিকে, ডেথ ওভারে বোলারদের ভুলও স্পষ্ট। রোভম্যান পাওয়েলদের বিপক্ষে তানজিমের ফুলটস কিংবা তাসকিনের স্টাম্প বরাবর বল সহজেই বাউন্ডারি পাচ্ছে। একমাত্র মুস্তাফিজুর রহমানই কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনতে পারছেন তাঁর ওয়াইড ইয়র্কার ও স্লোয়ারে। মিরপুরের মতো স্পিন সহায়ক উইকেট না থাকায় রিশাদ হোসেনও ওভারপ্রতি গড়ে দশ রান দিয়ে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ দল যেন ক্যারিবীয়দের কাছে খোলা বই হয়ে উঠেছে।

অন্যদিকে, গতকালও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কয়েকজন খেলোয়াড় অনুশীলন করেছেন সাগরিকায়। মাঠ ও আউটফিল্ড বেশ পছন্দ হয়েছে তাদের। তবু তানজিম সাকিবের দৃঢ় কণ্ঠে শোনা গেল প্রতিশ্রুতি

এই মাঠ আমাদের। কাউকে সিরিজ জিতে ফিরতে দেব না।



banner close
banner close