স্বপ্ন ছিল দেশের হয়ে খেলার—সেই স্বপ্নকেই সত্যি করে দেখিয়েছেন নওগাঁর তাশফিয়া জান্নাত তিশা। জাতীয় জার্সি গায়ে দিয়ে আন্তর্জাতিক হকির মঞ্চে পা রেখে অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপে বাংলাদেশের হয়ে ব্রোঞ্জ পদক জিতে নিয়েছেন তিনি। নিজের অভিষেকেই এই সাফল্য এনে গর্বিত করেছেন পুরো জাতিকে।
নওগাঁ শহরের পলিটেকনিক মোড় এলাকার লাটাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা তিশা বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। খেলাধুলার প্রতি তার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। ২০২০ সালে নওগাঁ বেসিক ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হন। শুরুটা হয়েছিল অ্যাথলেটিকস দিয়ে, পরে হকির প্রতিই আগ্রহ বাড়ে। ২০২২ সালে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিকেএসপিতে সুযোগ পান।
তিশা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল দেশের হয়ে খেলব। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। জাতীয় দলের হয়ে এশিয়া কাপে খেলেছি, পদক জিতেছি—এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। যখন দেশের পতাকা উড়ছিল, মনে হয়েছে, সব পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।’
তিশার এই অর্জনে গর্বিত তার পরিবার। মা নাজমা খাতুন বলেন, ‘স্বপ্ন ছিল মেয়েকে ডাক্তার বানাব, কিন্তু ওর ঝোঁক ছিল খেলাধুলার প্রতি। এখন বুঝি, ওর সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। দেশের হয়ে খেলছে—এর চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না।’
বাবা মো. বাচ্চু বলেন, ‘মেয়েকে বলেছি, মন দিয়ে যা করতে চাস, করো। আমরা সবসময় পাশে আছি। ওর এই সাফল্য পুরো জেলার সম্মান।’
তিশার সম্মানে জেলা ক্রীড়া অফিসের আয়োজনে সোমবার (২১ জুলাই) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘তিশা আমাদের গর্ব। হকি খেলা আবার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। তার মতো প্রতিভারাই ভবিষ্যতের ক্রীড়াবিপ্লবের ভিত্তি।’
জেলা ক্রীড়া অফিসার আরিফুজ্জামান বলেন, ‘তিশার মতো খেলোয়াড়রা আমাদের অনুপ্রেরণা। আমরা চাই, আরও অনেক তিশা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্য অর্জন করুক।’
অনুষ্ঠানে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য এনামুল হক, সদস্য সুমন আলী, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও তিশার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:








