মঙ্গলবার

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:২১

শেয়ার

ইলেকট্রিক গাড়ি কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বা ইভি (ইলেকট্রিক ভেহিকল)-এর বাজার ক্রমশ বাড়ছে। পরিবেশ বান্ধব এবং জ্বালানি-সাশ্রয়ী বিকল্প হিসেবে ইভির প্রতি গাড়িপ্রেমীদের আগ্রহ বাড়লেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন শুধুমাত্র তেলের খরচ কমবে এই ভেবে নয়, বরং কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে অবগত থাকা প্রয়োজন।

তাই ইভি কেনার আগে পাঁচটি প্রধান দিক বিবেচনা করা জরুরি।

প্রথমত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এক চার্জে গাড়ির চলার দূরত্ব বা ‘রেঞ্জ’। বাংলাদেশের শহুরে ব্যবহারের জন্য সাধারণত ২০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার রেঞ্জের গাড়ি যথেষ্ট হলেও, যারা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে চান, তাদের জন্য কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার রেঞ্জ থাকা প্রয়োজন। কারণ, গাড়ির ব্যবহার, এয়ার কন্ডিশনারের ব্যবহার এবং রাস্তার পরিস্থিতি এই রেঞ্জের ওপর প্রভাব ফেলে।

দ্বিতীয়ত, চার্জিং সুবিধা ও অবকাঠামো। বর্তমানে ঢাকা ও কয়েকটি বড় শহরে সীমিত সংখ্যক চার্জিং স্টেশন চালু হয়েছে। তবে দীর্ঘ রুটে এখনো পর্যন্ত চার্জিং নেটওয়ার্ক পুরোপুরি গড়ে ওঠেনি। অনেকেই বাড়িতে নিজস্ব চার্জার স্থাপন করছেন, যা আবার বিদ্যুৎ সংযোগ ও খরচের ওপর নির্ভরশীল। ডিসি ফাস্ট চার্জ সুবিধা সময় বাঁচানোর ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

তৃতীয়ত, ক্রেতাকে মূল্য, কর এবং সরকারি প্রণোদনা বিবেচনা করতে হবে। বাংলাদেশে ইভি আমদানিতে তুলনামূলকভাবে কম শুল্ক ও প্রণোদনা থাকলেও, শুধুমাত্র গাড়ির প্রাথমিক দাম নয়, বরং চার্জার স্থাপন, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল— ব্যাটারি পরিবর্তনের খরচও হিসাবের মধ্যে রাখা উচিত।

চতুর্থত, রক্ষণাবেক্ষণ ও সার্ভিসিংয়ের বিষয়টি। যদিও ইভি-তে ইঞ্জিন বা গিয়ারবক্সের মতো চলমান যন্ত্রাংশ কম থাকায় সাধারণ রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম, তবে ব্যাটারি নষ্ট হলে তা পরিবর্তন করতে বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় হতে পারে। এছাড়া, দেশে এখনো দক্ষ ইভি মেকানিক এবং যন্ত্রাংশ সরবরাহ সীমিত।

সবশেষে, রিসেল ভ্যালু ও ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনা। দ্রুত প্রযুক্তি পরিবর্তনের কারণে পুরনো মডেলের ইভি বিক্রি করা ভবিষ্যতে কঠিন হতে পারে। পাশাপাশি, ব্যাটারি রিসাইক্লিং বা পুনর্ব্যবহারের সুযোগও বাংলাদেশে এখনো সীমিত।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ইভি কেনা ভবিষ্যতের জন্য ভালো সিদ্ধান্ত হলেও, ড্রাইভিং রেঞ্জ, চার্জিং সুবিধা, খরচ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনা— এই পাঁচটি বিষয় সচেতনভাবে বিবেচনা করলেই ক্রেতা আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী হতে পারবেন এবং পরিবেশও উপকৃত হবে।



banner close
banner close