অনেকে জানতে চান—দাফনের পর সম্মিলিত দোয়া সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?
এ বিষয়ে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, মৃতব্যক্তিকে দাফন করার পর কবরের পাশে কিছুক্ষণ অবস্থান করে তার জন্য রহমত, মাগফিরাত ও ফেরেশতাদের প্রশ্নের জবাবে ইমানি দৃঢ়তার দোয়া করা মুস্তাহাব। এই দোয়া একাকী বা সম্মিলিত—উভয়ভাবেই করা জায়েজ। তবে এটিকে বাধ্যতামূলক রীতি বা আবশ্যক আমল মনে করা যাবে না।
দোয়ার ভঙ্গি সম্পর্কে ফিকহে কিছু ব্যাখ্যা রয়েছে। কিবলামুখী হয়ে দোয়া করা উত্তম—এ বিষয়ে অধিকাংশ আলেম একমত। হানাফি মাজহাবের অনেক আলেম বলেন, দোয়ার সময় কবরকে সামনে না রেখে কিবলামুখী হয়ে দোয়া করা ভালো। তবে অন্যান্য মাজহাবের আলেমদের মতে, কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া করলেও তা জায়েজ ও শুদ্ধ। অতএব, কিবলামুখী হওয়াই উত্তম পদ্ধতি, তবে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া করাকে নিষিদ্ধ বলা যাবে না।
দাফনের পর মৃতের জন্য দোয়া করার নির্দেশ নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত। হজরত ওসমান ইবনে আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করতেন এবং বলতেন,
‘তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং তার জন্য দৃঢ়তার দোয়া করো। কেননা এখনই তাকে প্রশ্ন করা হবে।’
(আবু দাউদ: ৩২১৩)
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) আব্দুল্লাহ যুলবিজাদাইন (রা.)–এর দাফনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার দাফন সম্পন্ন করেন, তখন দুই হাত তুলে কিবলামুখী হয়ে দোয়া করেন—
‘হে আল্লাহ! আমি তার ওপর সন্তুষ্ট; আপনিও তার ওপর সন্তুষ্ট হয়ে যান।’
(মুসনাদে বাযযার: ১৭০৬)
আরেক হাদিসে এসেছে, হজরত আমর ইবনুল আস (রা.) মৃত্যুর সময় অসিয়ত করে বলেন—
‘আমাকে দাফন করার পর তোমরা আমার কবরের পাশে কিছুক্ষণ অবস্থান করবে। যেন তোমাদের দোয়া ও ইস্তিগফারের কারণে আমি শান্ত থাকতে পারি এবং চিন্তা করতে পারি যে, আমার রবের প্রেরিত ফেরেশতাদের প্রশ্নের কী জবাব দেব।’
(মুসলিম: ১২১)
আরও পড়ুন:








