সোমবার

২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৭ পৌষ, ১৪৩২

স্ত্রী নাকফুল না পরলে স্বামীর হায়াত কমে—এ ধারণা কি সত্য?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০:৩৮

শেয়ার

স্ত্রী নাকফুল না পরলে স্বামীর হায়াত কমে—এ ধারণা কি সত্য?
সংগৃহীত ছবি

আমাদের সমাজে বিয়ের পর নারীদের কিছু অলংকার পরা নিয়ে নানা অলিখিত নিয়ম রয়েছে—চুড়ি, নাকফুল, সিঁদুর ইত্যাদি। এসব না পরলে কেউ কেউ মনে করেন সংসারে অশান্তি আসবে, রিজিক কমে যাবে কিংবা স্বামীর আয়ু কমে যাবে! অথচ এসব বিশ্বাসের কোনো ধর্মীয় ভিত্তি নেই। এগুলো নিছক সমাজের তৈরি কুসংস্কার, ইসলাম নয়।

ইসলাম বাস্তবসম্মত ও পরিষ্কার নির্দেশনার ওপর দাঁড়ানো একটি জীবনব্যবস্থা। এখানে অলংকার পরা বা না পরা ব্যক্তিগত পছন্দ—ধর্মীয় বিধান নয়।

নাকফুল না পরলে স্বামীর আয়ু কমে—ইসলামের দৃষ্টিতে

ইসলাম পরিষ্কারভাবে জানায়, প্রত্যেক মানুষের বয়স পূর্বনির্ধারিত। স্ত্রী কোনো অলংকার পরলেন কি না, তার সঙ্গে স্বামীর আয়ুর কোনো সম্পর্ক নেই।

আল্লাহ তায়ালা বলেন—

“কোনো প্রাণী আল্লাহর অনুমতি ছাড়া মারা যায় না। তার নির্দিষ্ট সময় লিপিবদ্ধ আছে।”

— সুরা আলে ইমরান : ১৪৫

প্রখ্যাত আলেম শায়খ আহমাদুল্লাহও স্পষ্টভাবে বলেন—

স্বামীর জীবননির্ধারণ কোনো অলংকারের ওপর নির্ভরশীল নয়। আল্লাহ যে সময় নির্ধারণ করেছেন, ঠিক সেই সময়ই মৃত্যু হবে।

অতএব, নাকফুল না পরলে স্বামীর হায়াত কমে—এ ধরনের ধারণা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

নারীদের জন্য চুড়ি বা নাকফুল পরা কি বাধ্যতামূলক?

ইসলামে চুড়ি, নাকফুল বা অন্য কোনো অলংকার পরা বাধ্যতামূলক নয়। এগুলো সম্পূর্ণ রুচি ও স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপার।

অলংকার না পরলে রিজিক বা বরকত কমে যাবে—এ কথারও কোনো ভিত্তি নেই।

কোরআনে বলা হয়েছে—

“পৃথিবীর প্রত্যেক জীবের রিজিক আল্লাহর ওপর ন্যস্ত।”

— সুরা হুদ : ৬

নবীজি (সা.) কি অলংকার পরতে নিষেধ করেছেন?

না। ইসলামে নারীদের অলংকার পরা বৈধ। সাহাবিয়া নারীরাও অলংকার পরতেন, এবং নবীজি (সা.) তা নিষেধ করেননি।

ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন—

এক ঈদের দিনে নবীজি (সা.) নারীদেরকে সদকা করতে উৎসাহ দিলে তারা তাদের কানের দুল ও চুড়ি খুলে দান করতে লাগলেন।

— বোখারি : ১৪৩১

এটি প্রমাণ করে অলংকার পরা ইসলামসম্মত হলেও তা বাধ্যতামূলক নয়।

সারসংক্ষেপ

স্ত্রী নাকফুল না পরলে স্বামীর আয়ু কমে—এটি সম্পূর্ণ কুসংস্কার।

মানুষের হায়াত আল্লাহ নির্ধারণ করেন; কোনো অলংকারে তা বাড়ে বা কমে না।

চুড়ি, নাকফুল, দুল—এসব পরা ব্যক্তিগত পছন্দ, ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা নয়।

নবীজি (সা.) নারীদের অলংকার পরা নিষিদ্ধ করেননি।



banner close
banner close