শুক্রবার

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৪ পৌষ, ১৪৩২

কিয়ামতের দিন পৃথিবীর অবস্থা যেমন হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর, ২০২৫ ২১:১৯

শেয়ার

কিয়ামতের দিন পৃথিবীর অবস্থা যেমন হবে
প্রতিকি ছবি

কিয়ামতের দিন প্রতিটি কর্মের বিচার হবে। সেদিনের কঠোরতা এমন হবে যে মাতারা তাদের শিশুদের ভুলে যাবে, গর্ভবতীরা ভ্রূণ ফেলে দিবে, আর সবাইকে মাতালের মতো ভীত-বিহ্বল অবস্থায় দেখা যাবে। আল্লাহর কঠিন আজাবের সেই দিনের বিবরণে রয়েছে আমাদের জন্য শিক্ষা ও সতর্কবার্তা।

শিঙায় ফুঁ দেয়ার পর ভূমণ্ডলের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন,

يَوۡمَ تَرۡجُفُ ٱلۡأَرۡضُ وَٱلۡجِبَالُ وَكَانَتِ ٱلۡجِبَالُ كَثِيبٗا مَّهِيلًا অর্থাৎ সেদিন জমিন ও পর্বতমালা প্রকম্পিত হবে এবং পাহাড়গুলো চলমান বালুকারাশিতে পরিণত হবে।’ (সুরা মুযযাম্মমিল ১৪)

আল্লাহ তাআলা সুরা তহায় বলেন, সেদিন উঁচু উঁচু পাহাড়সমূহ সমূলে উৎপাটন করে বিক্ষিপ্ত করে দেয়া হবে। এরপর জমিনের সাথে পাহাড়সমূহ মিশিয়ে দিয়ে পুরো জমিন সমতল করে দিবেনকোথাও কোনো উঁচুনীচু থাকবে নাসমুদ্রমাটি একাকার হয়ে যাবেআর পৃথিবীতে সেদিনবিরাজ করবে পিনপতন নীরবতা।

মহাকাশের অবস্থা যেমন হবে

শিঙায় ফুঁ দেয়ার পর আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাবে। তারকারাজী আলোহীন হয়ে যাবে এবং সেগুলো বিক্ষিপ্ত হয়ে ঝরে পড়বে। সেদিন আসমানসমূহে যেসব ফেরেশতা থাকবেন তারও মারা যাবেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّمَا تُوعَدُونَ لَوَٰقِعٞ ٧ فَإِذَا ٱلنُّجُومُ طُمِسَتۡ ٨ وَإِذَا ٱلسَّمَآءُ فُرِجَتۡ ٩ وَإِذَا ٱلۡجِبَالُ نُسِفَتۡ তোমাদেরকে যা কিছুর ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা অবশ্যই ঘটবে। যখন তারকারাজি আলোহীন হবে, আর আকাশ বিদীর্ণ হবে, আর যখন পাহাড়গুলি চূর্ণবিচূর্ণ হবে।

সবশেষ প্রতিষ্ঠিত হবে বিচার দিবস

সেদিন মুষলধারে বৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে পুনর্জীবিত করবেন। এরপর কবর থেকে সবাই হাশরের ময়দানের দিকে ছুটতে থাকবেসেদিন সবাই এক স্থানে একত্রিত হবেআল্লাহ তাআলা সবার বিচার করবেন এবং সবার সুবিচার নিশ্চিত করে যার যার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিবেন

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وۡمَئِذٖ يَتَّبِعُونَ ٱلدَّاعِيَ لَا عِوَجَ لَهُۥۖ সেদিন তারা আহ্বানকারী ফেরেশতার অনুসরণ করবে। এর কোনো এদিক সেদিক হবে না। তিনি আরও বলেন।

وَعَنَتِ ٱلۡوُجُوهُ لِلۡحَيِّ ٱلۡقَيُّومِۖ وَقَدۡ خَابَ مَنۡ حَمَلَ ظُلۡمٗا ١١١ وَمَن يَعۡمَلۡ مِنَ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَهُوَ مُؤۡمِنٞ فَلَا يَخَافُ ظُلۡمٗا وَلَا هَضۡمٗا আর চিরঞ্জীব, চির প্রতিষ্ঠিত সত্তার সামনে সকলেই অবনত হবে। আর সে অবশ্যই ব্যর্থ হবে যে জুলুম বহন করবে। এবং যে মুমিন অবস্থায় ভালো কাজ করবে সে কোনো জুলুম বা ক্ষতির আশঙ্কা করবে না। (সুরা ত্বাহা আয়াত ১১১-১১২)

সেদিন জাহান্নামীদের সংখ্যা অনেক বেশি হবে। প্রতি হাজার মানুষের একজন বাদে সকলেই জাহান্নামে যাবে। সেদিনের ব্যাপারে হাদিসে এসেছে, সেদিন সূর্য মাথার উপরে চলে আসবে। প্রত্যেকে যার যার পাপের সমপরিমাণ ঘামে ডুবে থাকবে। তবে ৭ শ্রেণির নেককার বান্দাকে আল্লাহ তাআলা তার আরশের নিচে ছায়া দিবেন।

যারা ভালো আমল করবে তাদের ডান হাতে আমলনামা দেয়া হবে এবং যারা মন্দ আমল করবে তাদের বাম হাতে আমলনামা দেয়া হবে। সেখানে প্রত্যেকে তাদের ছোট বড় সব কাজের খতিয়ান দেখতে পাবে।



banner close
banner close