শুক্রবার

৬ জুন, ২০২৫
২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
১০ , ১৪৪৬

যে নফল রোজা মুছে দেয় দুই বছরের গুনাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৫ জুন, ২০২৫ ০৫:১৮

শেয়ার

যে নফল রোজা মুছে দেয় দুই বছরের গুনাহ
প্রতীকী ছবি।

মানুষ ভুল করে, পাপ করে, অন্যায় করে। কিন্তু আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু। বান্দা অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইলে তিনি মুহূর্তেই তা মাফ করে দেন।

শুধু তাই নয়, আল্লাহ এমন কিছু সহজ আমলের সুযোগ দিয়েছেন যার মাধ্যমে বান্দার ছোট-বড় বহু গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়। তেমনই এক মহান সুযোগ এনে দেয় জিলহজ মাস, বিশেষ করে জিলহজের ৯ তারিখ-‘ইয়াওমুল আরাফা’।

চলছে জিলহজ মাস। মুসলিমদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা (কুরবানির ঈদ)। এই ঈদের আগের দিন, অর্থাৎ ৯ জিলহজ, ইসলামে ‘ইয়াওমুল আরাফা’ নামে পরিচিত। এই দিনটি ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ, যা পাপ মোচন ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির আশার বার্তা নিয়ে আসে।

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এমন কোনো দিন নেই, যেদিন আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদেরকে আরাফার দিনের চেয়ে বেশি জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। তিনি সেদিন বান্দাদের নিকটবর্তী হন এবং তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সামনে গর্ব করেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৩৪৮)

আরাফার দিনের অন্যতম ফজিলতপূর্ণ আমল হলো নফল রোজা রাখা। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আরাফার দিনের রোজা সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে, তিনি এই এক দিনের রোজার বদৌলতে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন।- (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৬২)

অর্থাৎ, মাত্র এক দিনের রোজা রাখলেই আল্লাহ পাক বান্দার আগের বছর এবং পরের বছরের ছোটখাটো গুনাহসমূহ মাফ করে দেবেন। এটি এক অসাধারণ সুযোগ। গুনাহে ডুবে থাকা আমাদের মতো মানুষদের জন্য এটি হতে পারে গুনাহ মুক্ত হওয়ার স্বর্ণালী পথ।

বাংলাদেশের জাতীয় চাঁদের হিসাব অনুযায়ী, ৭ জুন শনিবার ঈদুল আজহা (১০ জিলহজ)। সেক্ষেত্রে ৬ জুন শুক্রবার হচ্ছে ৯ জিলহজ তথা ইয়াওমুল আরাফা। এই দিনেই রোজা রাখা উত্তম। অর্থাৎ যারা রোজা রাখতে চান, তারা ৫ জুন বৃহস্পতিবার রাতে সাহরি খেয়ে ৬ জুন শুক্রবার রোজা রাখবেন।

অনেকে সৌদির তারিখ অনুযায়ী একদিন আগে রোজা রাখতে চান, কিন্তু ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে এটি সঠিক নয়। কারণ, ‘ইয়াওমুল আরাফা’ কোনো স্থানভিত্তিক নাম নয়, বরং এটি একটি নির্দিষ্ট দিন- জিলহজ মাসের ৯ তারিখ। এটি প্রতিটি দেশের নিজস্ব চাঁদের হিসাব অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। তাই সৌদির অনুসরণ না করে বাংলাদেশে ৯ জিলহজ যেদিন পড়বে, সেদিনই রোজা রাখা শরিয়তসম্মত।

ইয়াওমুল আরাফা- একটি দিন, একটি রোজা, কিন্তু ফজিলত অপরিসীম। একদিনের রোজাতেই মাফ হয়ে যেতে পারে দুই বছরের গুনাহ। এটি আমাদের জন্য এক বিশাল সুযোগ, যা হয়তো প্রতিদিন আসে না। তাই এই দিনকে স্মরণ রাখুন, প্রস্তুতি নিন, রোজা রাখুন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। কারণ তিনি মাফ করার মালিক, আর এই দিন তিনি অসংখ্য মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।

banner close
banner close