শুক্রবার

২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১ পৌষ, ১৪৩২

বীরের বেশে ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন তারেক রহমানের, ছিলো লাখো মানুষের ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:৫৩

আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:৫৩

শেয়ার

বীরের বেশে ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন তারেক রহমানের, ছিলো লাখো মানুষের ঢল
সংগৃহীত ছবি

দীর্ঘ ১৭ বছর পর নিজ মাতৃভূমিতে ফিরলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আঠারো মাসের কারাবাসের পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেশ ছেড়ে লন্ডনে পাড়ি জমান তিনি। এতদিন স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে ব্রিটেনেই ছিলেন স্বেচ্ছানির্বাসনে।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা। এরপর বাংলাদেশের শাসনক্ষমতা যায় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে। সেই সময়েই তথাকথিত দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন তারেক রহমান। ১৮ মাস কারাভোগের পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। কারাগারে খালেদা জিয়ার পুত্রের ওপর নির্যাতনের অভিযোগও ওঠে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে লন্ডনে পাঠানো হয়।

সেখান থেকেই তিনি বিএনপির নেতৃত্বের হাল ধরেন। মাঝের ১৭ বছরে নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার দলটিকে দেশের বাইরে বসেও তিনি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনার হামলা ও মামলার কারণে দলের নেতাকর্মীরা বছরের পর বছর ঘরছাড়া ছিলেন।

দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষে অবশেষে নিজ দেশে বীরের বেশে ফিরলেন তারেক রহমান। নেতাকর্মীসহ দেশের মানুষের অফুরন্ত ভালোবাসা পেলেন তিনি।

এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান। তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের স্বাগত জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও মির্জা আব্বাস।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে তারেক জিয়ার প্রত্যাবর্তনে ইতোমধ্যেই উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে বিএনপি। বিমানবন্দর থেকে তিনি যান জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে তথা ৩০০ ফিট সড়কে অবস্থিত সংবর্ধনাস্থলে। সেখানে অপেক্ষমাণ লাখো নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য দেন তিনি।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে দেশের মানুষ যেভাবে স্বাধীনতা এনেছিল, ঠিক সেভাবেই ২০২৪ সালে এ দেশের ছাত্র-জনতা ৫ আগস্ট স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে।

একটি নিরাপদ দেশ গড়ার স্বপ্নের কথাও জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, তারা এমন একটি দেশ গড়তে চান, যেখানে একজন নারী সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে।

শুধু তাই নয়, বিগত ১৫ বছরে অসংখ্য মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ঘটেছে গুম ও খুন। সবশেষ বীর জুলাই ওসমান হাদিকে শহীদ করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এখনই সময় একসঙ্গে কাজ করার, একসঙ্গে একটি নিরাপদ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার।

এরপর তিনি সেখান থেকে বের হয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। পরে যান ফিরোজায়।

এদিকে, তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হন লাখো নেতাকর্মী। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই পায়ে হেঁটে ও খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সংবর্ধনাস্থলে আসেন দলের নেতাকর্মীরা। গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে চারপাশে নিয়োজিত ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

রাজধানীর কুড়িল সড়ক থেকে শুরু করে ৩০০ ফিট গণসংবর্ধনা মঞ্চের পরবর্তী অংশ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন। নেতাকর্মীদের স্লোগানে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। তারা প্রকাশ করেন নিজেদের উচ্ছ্বাস।

তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বলে মনে করছেন অনেকেই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রত্যাবর্তনে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।



banner close
banner close