বৃহস্পতিবার

২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০ পৌষ, ১৪৩২

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে আরও সুসংগঠিত হওয়ার সুযোগ বিএনপির: ড. সাব্বীর আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০৮:৩৯

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ০৮:৪১

শেয়ার

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে আরও সুসংগঠিত হওয়ার সুযোগ বিএনপির: ড. সাব্বীর আহমেদ
সংগৃহীত ছবি

ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক পালাবদলের প্রথম আঘাতেই গ্রেফতার হন তারেক রহমান। প্রায় ১৮ মাস কারাভোগের পর রাজনৈতিক বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে তাকে দেশ ছাড়তে হয়। সেই সময় থেকেই অনিশ্চয়তার দীর্ঘ পথচলায় পড়ে বিএনপি, শুরু হয় তারেক রহমানের দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসন।

একদিকে খালেদা জিয়ার কারাবাস ও শারীরিক অসুস্থতা, অন্যদিকে শীর্ষ নেতৃত্বের বিদেশে অবস্থান—এ দুই বাস্তবতার মাঝেও বিএনপি নতুন রূপে দল পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেয়। লন্ডন থেকে তারেক রহমানের ভার্চুয়াল নেতৃত্বে চলতে থাকে দলীয় কার্যক্রম। লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী মাঠে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় থাকলেও, সিদ্ধান্তগুলো তৃণমূলে যথাযথভাবে পৌঁছাচ্ছে কি না—এ নিয়েই ছিল সংশয় ও প্রশ্ন।

নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা—তারেক রহমান দেশে ফিরলে সকল বাধা ও অপশক্তি দূর হবে, আন্দোলন হবে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ। তার নেতৃত্বে তারা দেখতে চান একটি তারুণ্যনির্ভর, সম্ভাবনাময় ও নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক বাস্তবতা পাল্টে যায়। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে এই বৃহস্পতিবার দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে এটি আবেগ ও প্রত্যাশার এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। তবে বিশ্লেষকদের প্রশ্ন—নেতা ফিরলেও, বিএনপি কি নিজেকে সেই নেতৃত্ব বাস্তবায়নের উপযোগী করে প্রস্তুত করেছে?

রাজনীতি বিশ্লেষক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান মনে করেন,

"তারেক রহমানের শারীরিক উপস্থিতিই দলকে আরও সংগঠিত ও গতিশীল করবে।"

অন্যদিকে, গত ১৮ বছরে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বদলে গেছে প্রজন্ম—যাদের হাত ধরে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে, পতন হয়েছে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা সরকার। তাদের ভাষা, রাজনৈতিক চেতনা ও প্রত্যাশা বুঝে উঠা—এটাই হবে তারেক রহমানের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

রাজনীতি বিশ্লেষক ড. সাব্বীর আহমেদ মন্তব্য করেন—

"চব্বিশকে সামনে রেখেই তারেক রহমানকে অগ্রসর হতে হবে। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে সামন্তবাদী রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভাঙা এখন সময়ের দাবি।"

বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘ নির্বাসন-সময় তারেক রহমানকে রাজনৈতিকভাবে আরও পরিণত করেছে। এখন বিএনপির ভেতরে কাঠামোগত সংস্কার, মানসিকতার পরিবর্তন ও নতুন সময়ের রাজনৈতিক বাস্তবতায় দলকে উপযোগী করা প্রয়োজন—তার প্রত্যাবর্তনই হবে সেই পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।

ড. সাব্বীর আহমেদ আরও বলেন—

"ইউরোপে অবস্থান তাকে আধুনিক রাজনীতির ভাবনা দিয়েছে। সময়ের সঙ্গে দলকে পুনর্গঠন করা—এটাই এখন প্রত্যাশা। নেতার পরিবর্তন না হলে দলেরও পরিবর্তন আসে না।"

এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে শুধু তারেক রহমানই নন—নতুন রূপে, নতুন আদর্শ নিয়ে জনগণের সামনে দাঁড়ানোর আরেকটি সুযোগ পাবে বিএনপি।



banner close
banner close