শুক্রবার

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৪ পৌষ, ১৪৩২

জোট নয় আসন সমঝোতা, নির্বাচনে জামায়াতের নতুন কৌশল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১৬:৩১

শেয়ার

জোট নয় আসন সমঝোতা, নির্বাচনে জামায়াতের নতুন কৌশল
ছবি: সংগৃহীত

সমমনা দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনী জোট গঠনের পরিকল্পনা বাতিল করে আসনভিত্তিক সমঝোতার পথে হাঁটছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

সমমনা দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনী জোট গঠনের পরিকল্পনা বাতিল করে আসনভিত্তিক সমঝোতার পথে হাঁটছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে—এটি কি জামায়াতের ‘গোপন কৌশল’?

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একাধিক দলকে আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে দিলে পুরো প্রক্রিয়াটি ‘অংশগ্রহণমূলক’বলে বিবেচিত হবে। তাদের ধারণা, বিএনপির মতো জামায়াতও এখন এমন একটি কৌশল নিয়েছে, যাতে নির্বাচনে বহু দলের উপস্থিতি দেখানো সম্ভব হয়।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা প্রচলিত কাঠামোগত জোট করছি না। সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বসে নিশ্চিত করব যেন একই আসনে একাধিক প্রার্থী না থাকে।

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অংশ ছিল জামায়াতে ইসলামী। সেই নির্বাচনে জোট সরকার গঠনের পর জামায়াতের দুই নেতা মন্ত্রী হয়েছিলেন। তবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিএনপি-জামায়াত জোট ভেঙে যাওয়ার পর থেকে দুই দলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।

জামায়াত ও সমমনাদের মধ্যে আসনভিত্তিক সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে সাম্প্রতিক সময়ে একযোগে কর্মসূচি পালন করেছে জামায়াত ও আরও সাতটি সমমনা দল। তাই ধারণা করা হচ্ছিল, এসব দল নিয়ে নির্বাচনী জোট গঠনের ঘোষণা আসবে।

কিন্তু বুধবার সিলেটে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, আমরা কোনো জোট করছি না। নির্বাচনী সমঝোতার ভিত্তিতে এগোব। প্রতিটি জায়গায় একটি বাক্স থাকবে—এই নীতিতেই আমরা কাজ করছি।

২০২৪ সালের অগাস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ইসলামপন্থি দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার চেষ্টা করছিল জামায়াত। বরিশালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঙ্গে শফিকুর রহমানের সৌজন্য সাক্ষাতের পর সেই আলোচনা নতুন গতি পায়।

এরই মধ্যে জামায়াত বিভিন্ন আসনে স্থানীয় পর্যায়ে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। দলীয় সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয়ভাবে চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়নের সময় বিএনপির মতো তারাও কিছু আসন সমমনাদের জন্য ছেড়ে দেবে। ঐসব আসনে আগে ঘোষিত জামায়াত প্রার্থীরা প্রয়োজনে সরে দাঁড়াবেন।

দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এখানে কোনো গোপন কিছু নেই। জোটের কাঠামো তৈরি না করেই আমরা পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে এক আসনে এক প্রার্থী নিশ্চিত করব।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদেরও বলেন, শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল ভোট যেন ভাগাভাগি না হয়। তাই আসনভিত্তিক সমঝোতার কথাই আমরা বলেছি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০১৪ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি ও জামায়াতসহ অনেক দল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতের ২২ জন প্রার্থী বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

এবার শুরু থেকেই স্থানীয় পর্যায়ে প্রার্থী ঘোষণা করছে জামায়াত। সমমনাদের সঙ্গে আসনভিত্তিক সমঝোতা চূড়ান্ত হওয়ার পর শিগগিরই কেন্দ্রীয়ভাবে দলীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে তারা।



banner close
banner close