বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলায় সৌদি সরকারের পাঠানো দুম্বার মাংস বিতরণে বড় ধরণের অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। দুঃস্থ ও এতিম শিশুদের জন্য প্রেরিত এই মাংসে ভাগ বসিয়েছে বিএনপি, জামায়াত ও সাংবাদিকরা।
গত শুক্রবার রাত ১১ টায় এই মাংস বিতরণ করা হয়।
জানা গেছে, শরণখোলায় মোট ১০ কার্টন দুম্বার মাংস এসেছিল। প্রতিটি কার্টনে ১০ প্যাকেট করে মাংস থাকার কথা অর্থাৎ ১০ কার্টনে মোট ১০০ প্যাকেট মাংস থাকার কথা ছিল। কিন্তু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে শরণখোলা উপজেলা প্রেসক্লাবে যে তালিকা সরবরাহ করেছে, সেখানে দেখা গেছে ২৯ টি মাদরাসায় বিতরণ করা হয়েছে মোট ৫০ প্যাকেট মাংস। হিসাব অনুযায়ী বাকি ৫০ প্যাকেট মাংসের কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরণখোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার প্রতিনিধি উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক (বর্তমানে জামায়াত ও বিএনপির একটি পক্ষের শেল্টারে রয়েছে) শেখ মোহাম্মদ আলী, শরণখোলা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রতিনিধি আব্দুল মালেক রেজা, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেল্লাল হোসেন মিলন এবং জামায়াতের আমির রফিকুল ইসলাম কবিরসহ আরও অনেকে এর সাথে জড়িত রয়েছেন।
শরণখোলার বাসিন্দা হুমায়ূন কবির নামের একজন সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, মাংস কোথায়? শরনখোলায় এক আওয়ামী দোসর তেলবাজ সাংবাদিকের বাসায় ৫ কার্টন এবং ইসলামী দলের প্রধানের বাসায় ১০ কার্টন দুম্বার মাংস কীভাবে গেল?
তবে নাম না প্রকাশ করার শর্তে অনেকে তথ্য প্রদান করলেও রাজনৈতিক নেতাদের ভয়ে তাদের পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ সোহাগ আকন বলেন, সব কার্টনে সমানসংখ্যক প্যাকেট ছিল না, কোনো কোনো কার্টনে ১০টির পরিবর্তে ৭ বা ৮টি প্যাকেট ছিল।
তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন— সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রেরিত সিল করা কার্টনে প্যাকেটসংখ্যা কমবেশি হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? সচেতন মহল বলছেন, সরকারি তত্ত্বাবধানে বিদেশি সহায়তার বণ্টনে এমন অসঙ্গতি প্রশাসনের ওপর জনগণের আস্থা কমিয়ে দেবে। তাদের দাবি, এই মাংস বিতরণের পুরো প্রক্রিয়াটি তদন্ত করে প্রকৃত সত্য বের করতে হবে।
এবিষয়ে কথা বলতে শরণখোলা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেল্লাল হোসেন মিলন ও জামায়াতের আমির রফিকুল ইসলাম কবিরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। অপরদিকে শেখ মোহাম্মদ আলী সরকারি খরচে রাস মেলায় থাকায় তাকেও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুল্লাহর কাছে মুঠোফোনে দুম্বার মাংস বিতরণে অনিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নিকট এ বিষয়ে অভিযোগ এসেছে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে বিধি অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন:








