সুদীর্ঘ ষোলো বছরের ফ্যাসিবাদী ও আধিপত্যবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল, সেটি আজ “জুলাই বিপ্লব"নামে জাতির অন্তরে অম্লান হয়ে আছে।
এই বিপ্লবের মাটিতে দাঁড়িয়ে ২০২৫ সালে প্রণীত “জুলাই জাতীয় সনদ” আমাদের জাতীয় ভবিষ্যতের পথরেখা হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু গভীর পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, উক্ত সনদ বিপ্লবের মূলচেতনা, ঐতিহাসিক পটভূমি ও ত্যাগের ধারাবাহিকতা থেকে বিচ্যুত হয়েছে।
মঞ্চ২৪ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, সনদের বর্তমান খসড়া সংশোধন ও তার আইনি ভিত্তি সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা না হলে, জুলাই বিপ্লবের অর্জন অবমূল্যায়িত হবে এবং জাতির নতুন পথচলা অনিরাপদ হয়ে পড়বে।
বিপ্লবের ঐতিহাসিক ভিত্তি
১।ফ্যাসিবাদের পতন:
দীর্ঘ ষোলো বছরের নিপীড়ন, দমননীতি, গুম-খুন ও রাজনৈতিক একচ্ছত্রতার বিরুদ্ধে ছাত্র ও তরুণ প্রজন্মের রক্তাক্ত সংগ্রামই জুলাই বিপ্লবের জন্ম দেয়।
বুয়েটের শহীদ ফাহাদ হাবরার আত্মদান ছিল এই বিপ্লবের আগুনের প্রথম শিখা, যার আলোয় উজ্জীবিত হয় সমগ্র বাঙালি মুসলমান জাতিসত্তা।
২। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ:
শাপলা, পিলখানা ও মোদী-বিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের মানুষ ভারতীয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের সংকল্প ব্যক্ত করে।
জুলাই বিপ্লব এই ধারাবাহিকতারই পূর্ণ বিকাশ—একটি আত্মমর্যাদাশীল, সার্বভৌম মানিবিক মূল্যবোধনির্ভর রাষ্ট্রচেতনার পুনর্জন্ম।
৩।ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা:
১৯৭৫ সালের বিপ্লবীরা যেভাবে বাকশালের কবর রচনা করে বাংলাদেশকে একদলীয় ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করেছিল, ঠিক সেই ধারার উত্তরসূরী হিসেবেই ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব জাতিকে পুনরায় মুক্তির পথে দাঁড় করায়।
সনদের ত্রুটি ও সংশোধনীর দাবি
১। ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের অভাব:
সনদে “গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র” গঠনের কথা বলা হলেও, ইনসাফ বা ন্যায়ের ভিত্তিতে সমাজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি অনুপস্থিত। অথচ, “জুলাই স্পিরিট”-এর প্রাণশক্তিই ছিল ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্রচেতনা।
২।‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ অনুপস্থিতি:
একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রের জাতীয় সনদের সূচনায় ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ না থাকা বিপ্লবের মর্মবাণীর সাথে সাংঘর্ষিক।
এটি কেবল একটি বাক্য নয়—এটি জাতির আত্মপরিচয়ের ঘোষণা।
৩। শহীদ ও সংগ্রামীদের অবদান স্বীকৃত নয়:
সনদে পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন, শহীদ ছাত্র, ও গণজাগরণের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি অনুপস্থিত।
মঞ্চ২৪ দাবি করছে—সনদে শহীদদের নাম ও সংগ্রামের ধারাবাহিকতা সংযোজন করা হোক, যেন ইতিহাস বিকৃত না হয় এবং বিপ্লবের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকে।
৪।আইনি ভিত্তি অনির্দিষ্ট:
জুলাই সনদ ২০২৫ কিভাবে সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইনি রূপ নেবে, তার কোনো ব্যাখ্যা নেই।
সনদের বাস্তবায়ন আইনি স্বীকৃতি ব্যতীত অসম্ভব। তাই প্রয়োজন—
একটি “জুলাই সনদ আইন” প্রণয়ন,
সনদকে সংবিধানের মূলনীতি অধ্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করা,
এবং সনদ বাস্তবায়ন তদারকির জন্য একটি জাতীয় কমিশন গঠন।
৫।ফ্যাসিবাদ বিরোধী ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া:
সনদে যারা গণবিরোধী অপরাধ, রাষ্ট্রদ্রোহ বা মানবতা বিরোধী ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিল, তাদের বিচারের নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি নেই।
মঞ্চ২৪ মনে করে, ন্যায়বিচার ব্যতীত কোনো বিপ্লব টিকে না। তাই বিপ্লববিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা আবশ্যক।
১।জুলাই সনদ ২০২৫-এর পূর্ণ আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা হোক।
২।বিপ্লবচেতনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংশোধনী সংযোজন করা হোক।
৩। বিপ্লব ও শহীদদের অবদানকে জাতীয় ইতিহাসে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হোক।
৪। ইনসাভিত্তিক সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতি সনদের মূল কেন্দ্রে স্থান পাক।
মঞ্চ২৪ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, বিপ্লব কেবল অতীত নয়—এটি ভবিষ্যতের দায়।
এই দায় পালন করতে হলে আমাদের জাতীয় সনদকে বিপ্লবের চেতনা, ইতিহাস ও ন্যায়ের ভিত্তিতে পুনর্গঠিত করতে হবে।
তবেই বর্ষা বিপ্লবের শহীদদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে, তবেই বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে ইনসাফ ও মর্যাদার রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
চলমান প্রেক্ষাপট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বল দরকার, আজকে জুলাই যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়!আপনি তাদের আঘাত করে বিপ্লবকে আঘাত করেছেন আবার মামলা দেন? হাওন আংকেলের মতো পালানো লাগবে লিখে রাখেন।অবিলম্বে ৯০০ মামলা প্রত্যাহার করেন।
আর মামালা দিবেন তাদের নামে যারা পরিকল্পিত ভাবে আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে।আমার দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয় অথচ প্রশাসন জানেই না কারা জড়িত।জানার দরকার নেই, লীগের বিরুদ্ধে চিরুনী অভিজান চালান এবং এদের বিচারের মুখোমুখি করেন দেখবেন এস আলমের টাকা কীভাবে আগুন হয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে জানিতে পারবেন।
আর রাজনৈতিক নেতাদের অনুরোধ করব,জুলাই নিয়ে তামাশা করবেন না।এনসিপি আজকে আস্থা হারিয়েছে অর্থনৈতিক সচ্ছতা না থাকায়,বি এনপিআধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই করছে।এসব বাদ দিয়ে দেশের জন্য লড়াই করেন।আমরা জামাত, বি এন পি, এন সি পি কে জনগণের কাতারে দেখতে চাই। সালাউদ্দিন ভাইদের মতো মানুষদের থেকে জুলাই বিপ্লবীদের আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বলা শোনতে চাই না।
আরও পড়ুন:








