স্বৈরাচারি শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে তেল-গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির তীব্র সংকটে চরম দুর্ভোগ নেমে আসে জনজীবনে। সেইসাথে দফায় দফায় দাম বাড়ার পাশাপাশি বাজারে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে রীতিমতো নাভিঃশ্বাস উঠে যায় সাধারণ মানুষের।
আর তাদের এসব কষ্ট ও দুর্ভোগ নিয়ে হাসি-তামাশা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কথা বলে মজা লুটেছে হাসিনা। মুখ খিস্তি করে কথা বলার সময় ভেতরে ভেতরে সে যে অট্টহাসিতে মেতে উঠতো সেটা বোঝাই যেতো। মানুষের সাথে এমন করে কথা বলে এক অমানুষিক তৃপ্তি ও আনন্দ পেতো হাসিনা।
হাসিনার শাসনামলে বাজারে নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে দিশেহারা হয়ে পড়ে সীমিত আয়ের মানুষ। গরীবের আমিষ বলে পরিচিত ডিমের দাম পৌঁছায় দু’শ টাকা ডজন। সস্তার মাছ, চাষের পাঙ্গাস ও তেলাপিয়ার দামও বেড়ে যায় আড়াই-তিন গুন পর্যন্ত। দেশি মুরগী আর গরু-খাঁসির মাংসের মূল্যও চলে যায় ধরা ছোয়ার বাইরে।
স্বৈরাচারি আমলে প্রায় সব রকম শাক-সবজি বিক্রি হতো চড়া মূল্যে। কাঁচামরিচের দাম ১৬’শ টাকা পর্যন্ত ওঠে। রাজধানীর বাইরে দুই হাজারও ছুঁইছুঁই করেছে। আলু-পেঁয়াজের মূল্যও বেড়ে যায় অনেক। পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পেঁয়াজ ছাড়াও রান্না হয়, বলেন, তিনি নিজেও নাকি পেয়াজ ছাড়াই রান্না করতেন।
তার অবান্তর ও হাস্যকর এসব কথার সাথে সুর মেলাতো তার পা-চাটা মন্ত্রীরাও।
নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে কিছু বললেই হাসিনা জাতিকে নিত্যপণ্য সংরক্ষণ ও খাবারের উদ্ভট সব রেসিপি বাতলে দিতো। এই যেমন- কাঁচামরিচের দাম কম থাকার সময়ে তা প্রচুর পরিমানে কিনে সিদ্ধ করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
একইভাবে, ডিমও সিদ্ধ করে সংরক্ষণের রেসিপিও দিয়েছেন। দাম বেড়ে গেলে ডিপ ফ্রিজ থেকে বের করে পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর তা রান্নার উপদেশ দিতেন। তার এমন সব কথা শুনে মনে হতো- হাসিনা কেবল মানুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যই করতো না, তার কথায় মানুষের প্রতি চরম ঘৃণাও প্রকাশ পেতো।
মাংসের দাম নিয়ে কথা উঠলেই হাসিনা কাঠাল খেতে বলতো। তার ভাষায় কাঠালের স্বাদ নাকি পুরোই মাংসের মতো। এসব রেসিপির কথা হাসিনা প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলতো আর গণমাধ্যমগুলোও তা ফলাও প্রচার করতো।
ফ্যাসিস্ট হাসিনা প্রায়ই বিভিন্ন সভাবেশে হাতে মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে মানুষকে প্রশ্ন করতো- এই মোবাইল ফোন আপনাদের কে দিয়েছে? উত্তরটা সে নিজেই দিয়ে বলতো- তিনিই মানুষের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিয়েছে। সাথে অবশ্য তার গুনধর পুত্র জয়ের নামও উচ্চারণ করতো। মানুষের যা কিছু আছে তার সবটাই নাকি তার দেয়া। পদ্মা সেতুর মতো সব কিছুই হাসিনা তার টাকাতেই করেছে- এমন হাস্যকর দাবিও করতো। ভাবখানা এমন ছিলো সবটাই তার নিজস্ব টাকায় করা।
শুধু তাই নয়, নানা সময়ে হাসিনার করা সব হাস্যকর মন্তব্য, সাধারণ মানুষকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে দেয়া এসব বক্তব্যের পাশাপাশি, ক্ষমতায় টিকে থাকতে গুম-খুন, বিরোধীদের উপর নানা নির্যাতনও চালায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা।
সব শেষ জুলাই আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞের নির্দেশনাও দিয়েছে তিনি। এরপর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েও খান্ত হননি হাসিনা। সেখান থেকে মাঝেমধ্যেই দেশে ফেরার ঘোষণাও দিচ্ছেন ।
তার এসব হাস্যকর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় সাধারণ মানুষের কাছে। বিভিন্ন সময়ে হাসিনার করা এসব হাস্যকর মন্তব্য তার মানসিক বিকারগ্রস্ততার বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেছেন সাধারণ মানুষ।
এমনকি হাসিনার এসব বক্তব্যকে পাগলের প্রলাপ বলেও মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।
এছাড়াও, এ বিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলেছে বাংলা এডিশন টিম। ফোনালাপে বাংলা এডিশনকে অধ্যাপক ডাঃ এম. এস. কবীর জুয়েল বলেন, এই ধরনের মন্তব্য মানসিক রোগেরই একটি অংশ। এমনকি ক্ষমতার প্রতি আসক্তি থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা সাধারণত এমন বক্তব্য দিয়ে থাকেন বলেও উল্লেখ করেন ডাক্তার এম এস কবীর জুয়েল।
এদিকে, মেঘনা-গোমতী সেতু থেকে টোল আদায়ে অনিয়মের অভিযোগে হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার ছয় সহকর্মীসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
ভিডিও লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=0EnXjcR12KI
আরও পড়ুন:








