বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এক বছর আগে দানবীয় শক্তি ছাত্র জনতার উত্তাল আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। দেশটা এখন মুক্ত হয়েছে। মনে হয় আমরা এখন স্বাধীন দেশে আছি। আগে প্রতি মুহূর্তে মনে হতো আমাদের শিকল পড়িয়ে রাখা হচ্ছে। রাতে আমরা ভালো করে ঘুমাতে পারতাম না পালিয়ে বেড়াতে হতো। মামলার মোকদ্দমা জেলে যাওয়া, নিত্য নৈমিতিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমাদের মা-বোনেরা কেউ নিরাপদ ছিলাম না। এই অবস্থা থেকে আমরা বেড়িয়ে এসেছি। আমাদের অন্তত একটা নিশ্বাস ফেলার সময় হয়েছে। আমরা সবাই মিলে একটা অন্তবর্তীকালীণ সরকার গঠন করেছি প্রফেসর ইউনুসের নেতৃত্বে।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় হান্নান শাহ্ স্মৃতি সংসদের উদ্যেগে কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি'র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আ স ম হান্নান শাহ্’র ৯ম মৃত্যুার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, প্রফেসর ইউনুস আমাদের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার মানুষ। তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। পৃথিবীর সমস্ত দেশের নেতারা তাকে সম্মান করেন। আমরা সেই জন্যই তাকে দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে একটা নিরপেক্ষ উপদেষ্টা মন্ডলী তৈরি করেছে। তিনি বাংলাদেশে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন। সে নির্বাচনে একটা পার্লামেন্টে জনগণের প্রতিনিধি থাকবেন এবং একটা সরকার পাব।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সরকার আইনশৃঙ্খলা ধ্বংস করে দিয়েছিলো। সেটাকে তিনি ঠিক করার চেষ্টা করছেন। যে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, সেটাকে ঠিক করার চেষ্টা করছেন। ব্যাংকগুলো লুট করে সাফ করে দিয়ে গেছে। বাংলাদেশকে ছোট করে দিয়েছিলো। সেই জায়গাটা ঠিক করার চেষ্টা করছেন। তারা চেষ্টা করছেন কিভাব
একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেয়া যায়। বাংলাদেশের মানুষের দাবী অনুযায়ী কিছু সংস্কার কাজ তিনি করেছেন। ৬টা সংস্কার কমিশন করেছিলেন। সংস্কার কমিশনগুলো আলোচনা করে কতগুলো প্রস্তাব দিয়েছিলো। সে প্রস্তাবগুলোর উপরে দীর্ঘ ৬ থেকে ৭ মাস আলোচনা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া দেশের কাঠামো পরিবর্তন করার জন্য বলেছিলেন। তারেক রহমানও ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন। আজকে সরকারের কাছ থেকে যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে সবগুলো ৩১ দফার মাঝে রয়েছে। ওই সবগুলোর মাঝে আমরা একমত রয়েছি। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল আছে, কিছু লোকজন আছে, যারা সমালোচনার জন্য মিথ্যা প্রচারণা করে সেগুলো ইউটিউবের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। তার মাঝে একটা প্রচার করা হয় বিএনপির সংস্কার মানে না। আরে বিএনপি তো সংস্কারের জন্মদাতা’ই। সংস্কারের মধ্য দিয়ে বিএনপি'র জন্ম হয়েছে।
গাজীপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্ব এবং কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আজিজুর রহমান পেরার সঞ্চালনায় স্মরনসভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কাজী ছাইয়্যেদুল আলম বাবুল। অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন ড. এম এ কাইয়ুম, হুমায়ুন কবীর খান, বেনজীর আহমেদ টিটু, অধ্যাপক ডা: এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, মজিবুর রহমান, ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী, ওমর ফাররুক সাফিন, শাহ রিয়াজুল হান্নান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা প্রমুখ।
আরও পড়ুন:








