অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করার পর থেকে বেশ নড়েচড়ে বসেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় দলগুলো। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলের পর এবারই প্রথম শতস্ফূর্তভাবে সব দলের অংশগ্রহনের মাধ্যমে হতে যাচ্ছে এ নির্বাচন। তাই রীতিমতো গণসংযোগ, সভা, সমাবেশ, লিফলেট বিতরণ সহ নানা কার্যক্রম করে চলেছেন বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
এ সকল কার্যক্রমে খুলনায় সব থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও কার্যক্রম ঠিকভাবে করার লক্ষে দলটির কেন্দ্র থেকে তারা অনেক আগেই সারা দেশব্যাপী ৩০০ আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে, তাই তাদের নির্বাচনী প্রচারণার কার্যক্রমও বেশ গতিশীল এবং দলও বেশ সুসংগঠিত। প্রতিদিনই দল থেকে ঘোষিত প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনে দাড়িপাল্লার পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। গণ সংযোগ, লিফলেট বিতরণ, বাড়িতে বাড়িতে প্রচার প্রচারণা, সভা, সমাবেশ, পথসভাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারা।
পিছিয়ে নেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থীরাও। তারাও নিজ নিজ আসনে চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। পাড়া মহল্লার চায়ের দোকান, বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সব জায়গাতেই হাত পাখার পক্ষে তারা করছেন গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ।
গণ-অভুত্থ্যানের কোল ঘেষে জন্ম নেয়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র নেতৃবৃন্দরাও বসে নেই। তাদের প্রার্থী ঘোষণা করা না হলেও খুলনায় প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রায় এক ডজন এনসিপির নেতৃবৃন্দ। তারা নিজ নিজ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি কেন্দ্রেও চালাচ্ছেন জোর লবিং। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের নির্বাচনী তৎপরতা জোরদার করছেন। দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃত্ব ইতিমধ্যে বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হিসেবে নিজেদের প্রস্তুত করছেন। যদিও বেশিরভাগ প্রার্থীই নির্বাচনী মাঠে নতুন মুখ। তবে বয়সে তরুণ হলেও তাদের উদ্যম, সাংগঠনিক দক্ষতা ও স্থানীয় উন্নয়নে ভূমিকা তাদেরকে সম্ভাবনাময় প্রার্থীতে পরিণত করবে বলে আশাবাদী কর্মী সমর্থকরা।
খুলনায় জাতীয় পার্টির অফিসে গণ অধিকার পরিষদের ৩ দফা হামলার পরেও থেমে নেই তারা। সব বাঁধা উপেক্ষা করে গত ৩ অক্টোবর দলীয় কার্যালয়ে জেলা জাতীয় পার্টি বিশেষ বর্ধিত সভা করেছে। কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সফিকুল ইসলাম মধুর আহবানে ও তার সভাপতিত্বে এ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে তিনি আগামী নির্বাচনে নিজেদের অংশগ্রহনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি এ কথাও উল্লেখ করেন, আর যদি কোন বাঁধা বা হামলা আসে তাহলে সেখানেই প্রতিহত করা হবে। হামলার পরিবর্তে হামলা, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমাদের। পিছে ফিরে তাকাবার মত সময় আমাদের নেই।
তবে নির্বাচনী মাঠে দেশের সবচেয়ে বড় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন পথে। সরকার ঘোষিত সময়ানুযায়ী নির্বাচনের বাকি আর মাত্র সাড়ে ৪ মাস। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিএনপি খুলনা-৫ আসনে সাবেক এমপি আলী আজগর লবীকে ছাড়া আর কোন আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি। ফলে প্রতিটি আসনে দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক প্রার্থী থাকায় কেউই মাঠে ঠিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম করতে পারছেন না। যেখানে সব দলই তাদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় ব্যাস্ত, সেখানে বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচনী মাঠে দেখা যাচ্ছে না। শুধু দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতেই বর্তমানে তাদের সময় পার হচ্ছে।
আরও পড়ুন:








