অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে দিলে অনেক ঝামেলা এড়ানো সম্ভব হতো বলে মনে করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চলেছে। আমার স্ত্রী আজকে সকালে ব্যাংকে ফোন করেছেন কিছু টাকা তোলার জন্যে। ব্যাংক থেকে বলছে, সরি ম্যাডাম, আমরা পাঁচ হাজার টাকার বেশি দিতে পারব না। এই এক বছরের মধ্যে যদি আমরা সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন আনতে না পারি তাহলে কীভাবে কী হবে। এইসব ঝামেলাগুলো এড়িয়ে যাওয়া যেত, যদি তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনটা করা যেত।’
আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে যৌথভাবে এর আয়োজন করে ‘ভাসানী জনশক্তি পার্টি’ও ‘ভাসানী অনুসারী পরিষদ’।
অনুষ্ঠানে ‘জটিলতা বৃদ্ধি না করে’জুলাই সনদ ও সংস্কারের কাজ শেষ করে নির্বাচনের বিষয়ে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করে ফেলুন। একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধি নিশ্চিত করুন। এছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিছু সংখ্যক রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য নিত্যনতুন দাবি তুলেছে। এমন এমন দাবি তুলছে, যার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের পরিচিতই নেই। ‘সংস্কার’শব্দটার সঙ্গে আমাদের সাধারণ মানুষ পরিচিত না। পিআর পদ্ধতি বুঝতে সময় লাগে। এর বড় একটা সমস্যা হচ্ছে যে, আপনি ভোট দিলেন, কিন্তু কাকে ভোট দিলেন আপনি জানেন না। ব্যক্তিকে চেনেন না। আপনি ভাবলেন, আপনার এলাকায় একজন নতুন জনপ্রিয় মানুষ আছে সলিমুদ্দিন সাহেব। আপনারা তাকে লক্ষ্য করে ভোটটা দিলেন। কিন্তু দেখা গেল কলিমুদ্দিন হয়ে গেল। এই বিষয়গুলো এখনো আমাদের কাছেই পরিষ্কার না। সাধারণ মানুষের কাছে তো নয়ই। এগুলো নিয়ে তারা হুমকি দিচ্ছেন। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে যে কেন করছেন এটা?
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পাঁচ আগস্টের পরেই আমি আমার পার্টি অফিসের সামনে বলেছিলাম তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে। আমি বলেছিলাম, আর বিলম্ব না করে তিন মাসের মধ্যেই জাতীয় সংসদে নির্বাচন দিন। আমাকে তখন সবাই সরাসরি আক্রমণ করে বলেছিলেন, খালি নির্বাচনই বোঝেন, ক্ষমতায় যেতে চান। কিন্তু মূল বিষয়টা তো অন্য জায়গায়। আমরা তো ঘর পোড়া গরু। আমরা দেখেছি যখনই একটা পরিবর্তন হয়, সেই পরিবর্তনগুলোর সুযোগ নিয়ে নেয় অন্যরা।’
ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নাজমুল হক নান্নু প্রমুখ।
আরও পড়ুন:








