রবিবার

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

বাঁশখালীর আবরার: রাজপথের সংগ্রামী থেকে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৪ আগস্ট, ২০২৫ ১২:২৮

শেয়ার

বাঁশখালীর আবরার: রাজপথের সংগ্রামী থেকে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত
ছবি বাংলা এডিশন

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত জুলাই স্মৃতি লিখন প্রতিযোগিতা ২০২৫-এ জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করে গৌরব বয়ে এনেছেন বাঁশখালীর তরুণ লেখক ও ছাত্রনেতা আবরার হাসান রিয়াদ। দেশের প্রায় চার হাজার প্রতিযোগীর মধ্য থেকে সেরা পঞ্চাশে উঠে চূড়ান্ত পর্বে জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় হন তিনি।

তার রচনায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে জুলাই আন্দোলনের উত্তাল রাজপথ, বিশেষ করে চট্টগ্রামের রাজপথে নেতৃত্ব, ত্যাগ ও সংগ্রামের অজানা কাহিনি। আন্দোলনের সম্মুখসারীর একজন হিসেবে আবরারকে কেউ চিনেন সাহসী নেতা হিসেবে, কেউ ডাকেন ‘সাপ্লায়ার বয়’ নামে- কারণ আন্দোলনে প্রয়োজনীয় মাইক, স্পিকার, লাঠি থেকে শুরু করে মানবসম্পদ সব সরবরাহ করতেন তিনি নিজের উদ্যোগে।

২০২৪ সালের ১৫ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলার পর আন্দোলন সংগঠিত ও বেগবান করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন আবরার। শহরের সমাবেশ, রাতের মিছিল, কর্মসূচি ঠিক করা—সবক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন সামনের কাতারে।

জুলাই বিপ্লবে আবরারের ভূমিকা: বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। হামলা, হুমকি, নিরাপত্তাহীনতার মাঝেও শহরে থেকে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। আন্দোলনের পক্ষে জনমত তৈরি করেছেন। গুলি ও হামলার পরও রাজপথে থেকেছেন, নেতৃত্ব ছেড়ে যাননি।

শৈশব থেকেই সামাজিক কর্মকাণ্ড ও শিক্ষার প্রসারে সক্রিয় আবরার রাজপথের নেতৃত্বের পাশাপাশি সামাজিক ও সাংগঠনিক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন সবসময়। তার দৃঢ় মনোভাবের কারণে আন্দোলনের কঠিন মুহূর্তেও সহযোদ্ধারা হতাশ হননি।

আবরার হাসান মননে একজন দেশপ্রেমিক যুবক। তিনি ছিলেন ছাত্র সমাজের বিশ্বস্ত অভিভাবক। নিজের জনপদ বাঁশখালীতে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একঝাঁক মেধাবীদের নিয়ে ছাত্র ও সমাজের কল্যাণে গড়ে তুলেছেন 'বাঁশখালী স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন।' এ ফাউন্ডেশনের মধ্যদিয়ে কৃতিশিক্ষার্থী সংবর্ধনা, গুণিজন সংবর্ধনা, ছাত্রকল্যাণ ফান্ড, গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসহায়তা প্রদান, দুর্যোগে ত্রাণ সহায়তা প্রদান, জুলাই আহতদের সম্মাননা ও আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ নানামুখি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে পুরস্কার প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় আবরার হাসান রিয়াদ বলেন- “এ পুরস্কার আমার একার নয়, যারা রাজপথে ছিলেন, সংগ্রাম করেছেন, তাদের সবার প্রাপ্য। এটি বাঁশখালীসহ দেশের তরুণদের জন্য এক অনুপ্রেরণার প্রতীক।”

স্থানীয়রা মনে করছেন, আবরারের এই অর্জন বাঁশখালীর জন্য এক গৌরবময় অধ্যায় এবং আগামী প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।



banner close
banner close