বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত দুই নেতা অ্যাডভোকেট সৈয়দ আলম ও ড. টি এম মাহবুবুর রহমানের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচির শেষ দিনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ র্যালি বের হয়ে চৌরাস্তার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মীর রাজিউর রহমান আসাদ। বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী খান, বড়বাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সলেমান আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জুলফিকার আলী, তাঁতী দলের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস আলী এবং সদস্য সচিব আবু সাঈদ প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির দুই বর্ষীয়ান ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকে কেন্দ্রীয় কমিটি ভুল তথ্যের ভিত্তিতে বহিষ্কার করেছে। এ সিদ্ধান্তে জেলার একটি মহল প্রভাব রেখেছে বলে তারা দাবি করেন। বক্তারা বলেন, গত ২৯ জুলাই চট্টগ্রামের ঘটনায় যেসব নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অথচ বালিয়াডাঙ্গীর দুই নেতার বিষয়ে এখনো কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি, যা অযৌক্তিক ও পক্ষপাতদুষ্ট।
তারা আরও বলেন, জেলা কমিটির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকেই এই বহিষ্কারাদেশ এসেছে। বিএনপির মহাসচিবের ভাই ও জেলা সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের ওপর হামলার ঘটনা এই দুই নেতার ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ প্রকৃতপক্ষে তারা বরাবরই দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অবিলম্বে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন তারা। বালিয়াডাঙ্গীর সাধারণ মানুষ এবং দলীয় নেতাকর্মীরা এই দুই নেতাকে ছাড়া কাউকে মেনে নেবেন না বলেও তারা দাবি করেন। তাদের মতে, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে বিএনপির বিজয় নিশ্চিত করতে এ দুই নেতার বিকল্প নেই।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই রাতে বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ আলম এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. টি এম মাহবুবুর রহমানকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এর আগে, ১২ জুলাই বালিয়াডাঙ্গীতে অনুষ্ঠিত বিএনপির কাউন্সিল শেষে সভাপতি পদের ফলাফল নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ফলাফল ঘোষণার সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে এবং তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরদিন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলের ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করেন এবং দুই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে প্রস্তাব পাঠান।
আরও পড়ুন:








