মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে সাউন্ড সিস্টেম বাজানো নিয়ে বিরোধের জেরে মজনু মোল্লা (২৫) নামের এক যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় মজনু মোল্লা বর্তমানে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটে গত ৭ জুলাই রাতে উপজেলার বয়ড়া ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামে। ভুক্তভোগী মজনু মোল্লা ওই গ্রামের মজিদ মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় গত ১৩ জুলাই (রোববার) বিকেলে হরিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তার মা হোসনেয়ারা।
অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত মো. জাকির হোসেন (৩২) যুবদলের কর্মী এবং যাত্রাপুর গ্রামের মোসলেম বেপারীর ছেলে। তার সঙ্গে ঘটনার সহযোগী হিসেবে একই গ্রামের সিদ্দিক (৩১) ও তুষার (২৫)-এর নামও উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে জাকির হোসেনের বাড়ির পাশে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে গান বাজানো হচ্ছিল। মজনু মোল্লা অসুস্থ থাকায় বারবার অনুরোধ করা হলেও গান বন্ধ বা শব্দ কমানো হয়নি। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে মজনু সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ করতে বললে, তাকে ডেকে নিয়ে বাড়ির সামনে ১০–১২ জন একযোগে কিল-ঘুষি, লাথি ও ইট দিয়ে আঘাত করে। এতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান তিনি। তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
রোববার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে মজনু মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, “শব্দ কমাতে বলায় আমাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়েছে। আমরা সরকারি খাস জমিতে থাকি। এই জায়গা নিয়ে আগেও তাদের সঙ্গে বিরোধ ছিল। এখন হুমকি দিচ্ছে—এখানে থাকতে দেবেন না। আমরা গরিব মানুষ, ন্যায়বিচার চাই।”
অভিযুক্ত জাকির হোসেন দাবি করেন, “আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। আমার চাচাতো বোনের বিয়েতে সাউন্ড সিস্টেম চালু ছিল। তখন মজনু কড়াল হাতে এসে সাউন্ডবক্স ভাঙচুর করে। কে বা কারা তাকে মেরেছে, আমি জানি না। এমনকি আমি সেদিন বাড়িতেও ছিলাম না। পরে শুনে আমি নিজেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমার সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে আমি আইনের শাস্তি মেনে নেব।”
উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবু সা'দাত মো. শাহিন মোল্লা বলেন, “জাকির আমাদের কর্মী হলেও তার কোনো দলীয় পদ নেই। ব্যক্তিগত কোনো অপকর্মের দায় দল নেবে না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হরিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহজাহান খান জানান, “ঘটনার তদন্তে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
আরও পড়ুন:








