গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রথম শ্রেণির কারাবন্দীর মর্যাদা পাচ্ছেন জনপ্রিয় শিল্পী ও সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম।
কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোছা. কাওয়ালিন নাহার ও মমতাজের আইনজীবী রেজাউল করিম আজ সোমবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কাওয়ালিন নাহার আজ দুপুরে বলেন, মমতাজ বেগম সংসদ সদস্য ছিলেন। কারাবিধি অনুযায়ী তিনি প্রথম শ্রেণির একজন বন্দী। প্রথম শ্রেণির কারাবন্দী যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন, তিনিও তা পাচ্ছেন।
দেড় মাসের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন মমতাজ। তাঁর আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, মমতাজ বেগম আগে কখনো কারাগারে যাননি। তিনি এই প্রথম কারাগারে গেছেন। যেহেতু তিনি সংসদ সদস্য ছিলেন, তাই কারাগারে প্রথম শ্রেণির কারাবন্দীর মর্যাদা পাচ্ছেন। প্রথম শ্রেণির কারাবন্দী হিসেবে তিনি পাচ্ছেন একটি খাট, একটি টেবিল ও পত্রিকা। আর খাবার হিসেবে পাচ্ছেন ভাত, মাছ ও মাংস।
কারাগারে পত্রিকার পাশাপাশি ধর্মীয় বইপুস্তক পড়ে মমতাজের সময় কাটছে বলে জানান তাঁর আইনজীবী রেজাউল। তিনি বলেন, আরও ধর্মীয় বই কারাগারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁকে তাঁর মক্কেল অনুরোধ করেছেন। সেসব বইপত্র দেওয়া হয়েছে।
মমতাজের দুই মেয়ে কানাডায় থাকেন বলে জানান তাঁর আইনজীবী রেজাউল করিম। তিনি বলেন, মমতাজের মেয়েরা কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন। আর তাঁর ছেলে দেশে থাকেন। তিনি বাক্প্রতিবন্ধী।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর মমতাজ আত্মগোপনে চলে যান। এ বিষয়ে তাঁর আইনজীবী রেজাউল বলেন, সরকার পতনের পর প্রথম কয়েক মাস মমতাজ মানিকগঞ্জে ছিলেন। পরে তিনি চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে যান। গত ১২ মে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে ধানমন্ডিতে গ্রেপ্তার করেন।
পরদিন ১৩ মে মমতাজকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। সেদিন আদালতে তোলার সময় উৎসুক জনতার ভিড়ে তাঁর পায়ে থাকা জুতা খুলে রাস্তায় পড়ে থাকে। আইনজীবী রেজাউল বলেন, পরে পরিবারের সদস্যরা মমতাজের জন্য নতুন জুতা কেনেন। সেই জুতা কারাগারে পৌঁছে দেওয়া হয়।
গত ২২ মে মমতাজকে নেওয়া হয়েছিল মানিকগঞ্জের আদালতে। সেদিন মমতাজের ওপর ডিম ও জুতা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘মমতাজ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী। তিনি শিল্পী হয়েও ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহযোগী হয়ে দিনের পর দিন তাঁর পক্ষে কাজ করেছেন।’
অবশ্য মমতাজের আইনজীবী রেজাউল বলেন, তাঁর মক্কেল একজন শিল্পী মানুষ। তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। শুধু এ কারণেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একের পর এক মামলায় তাঁকে আসামি করা হচ্ছে।
রাজধানীর কোতোয়ালি থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে আজ মমতাজকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আনা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:








