মঙ্গলবার

৩ জুন, ২০২৫
২০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
৭ , ১৪৪৬

জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১ জুন, ২০২৫ ২১:৩৬

শেয়ার

জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম
রাজধানীতে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন। ছবি :সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, জিএম কাদেরসহ ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এবং বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর জাতীয় পার্টির হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।

রোববার (১ জুন) রাজধানীর বিজয়নগর পানির টাংকি, আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে পুরানা পল্টন মোড় ঘুরে জাতীয় পার্টির অফিসের সামনে থেকে প্রদক্ষিণ করে আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে এসে মিছিল শেষ হয়।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, শেখ হাসিনার বিচার হলে জিএম কাদেরের কেন বিচার হবে না? আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন স্থগিত করতে হবে।

তিনি বলেন, এই দেশের গণতন্ত্র হত্যার জন্য হাসিনা যেভাবে দায়ী, ঠিক একইভাবে জিএম কাদেরও দায়ী। জিএম কাদেরের নামে মামলা হলেও, তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? উপদেষ্টা পরিষদ বা সরকারের কে জাতীয় পার্টিকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে? অন্যথায় কেন জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হচ্ছে না, মিছিল-মিটিংয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে না? জাতীয় পার্টির মিছিল-মিটিংয়ে আওয়ামী লীগ যুক্ত হচ্ছে। ইতোপূর্বে জিএম কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগকে দূরে রেখে নির্বাচন করা যাবে না, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে না। এখান থেকে প্রমাণিত হয়, জিএম কাদের যে হাসিনার এক নম্বর দোসর। হাসিনা দিল্লি পালিয়েছে, জিএম কাদের কীভাবে এখনো জেলের বাইরে?

বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের হামলার প্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার করুন। অন্যথায় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের আমরা থামাতে পারব না। এর দায়দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের নিতে হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তার করুন, অন্যথায় সারা দেশে আন্দোলন শুরু হবে।

রাশেদ খাঁন আরও বলেন, চা-নাস্তা খাওয়ানোর সংলাপ করবেন না। সংলাপ ফলপ্রসূ করতে সিদ্ধান্ত জানান। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করুন। আমাদের দাবি, আগামী সেপ্টেম্বরে তফসিল ও ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করুন। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একে-অপরের পরিপূরক। কোনোটাকে কোনোটার মুখোমুখি করে ধোঁয়াশা করবেন না। আগামীকাল সংলাপ থেকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। নির্বাচনের আগে অবশ্যই ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও গণহত্যার পথনকশা প্রকাশ করুন।

গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান দোসর। আ.লীগ নিষিদ্ধ হলেও জাতীয় পার্টি এখনো বহাল তবিয়তে। আমরা খবর পেয়েছি সরকারের ৩ জন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, রেজওয়ান হাসান ও মাহফুজ আলম জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রেখেছে, তারা আ.লীগকে জাতীয় পার্টির মাধ্যমে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা গণঅধিকার পরিষদ পরিষ্কারভাবে বলছি, জাতীয় পার্টি আজ থেকে নিষিদ্ধ, যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানে প্রতিরোধ হবে।

দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য হাসান আল মামুন বলেন, গত ১২ মে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিতভাবে জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবি করা হলে নির্বাচন কমিশন কিংবা সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বিগত ২০১৪, ১৮ এবং সর্বশেষ ২৪-এর আওয়ামী ভোট ডাকাতির নির্বাচনের প্রথম সহযোগী ছিল এই জাতীয় পার্টি। এদিকে হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পরও জিএম কাদের এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তার এবং জাতীয় পার্টির নিবন্ধন বাতিল করা হোক।

গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন- গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ আবু হানিফ, আব্দুজ জাহের, মাহফুজুর রহমান খান, রবিউল হাসান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ খান বাপ্পী প্রমুখ।

banner close
banner close