নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে দেশ পরিচালনার এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক সংকটের প্রেক্ষাপটে গত ৮ আগস্ট তিনি প্রধান উপদেষ্টার শপথ নেন এবং দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ড. ইউনূস দেশকে স্থিতিশীলতার পথে ফেরাতে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা, রাজনৈতিক সংলাপ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় জোর দেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তিনি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও নিরপেক্ষ প্রশাসনিক কাঠামোর মাধ্যমে দেশ পরিচালনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং প্রশাসনের কার্যকারিতা বাড়ানো। একই সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা যায়।
অর্থনৈতিক খাতেও স্থিতিশীলতা ফেরাতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা এবং রপ্তানি ও কৃষিখাতে সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা একাধিক বৈঠকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে দায়িত্ব পালনের সময় ড. ইউনূসকে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। প্রশাসনিক জটিলতা, রাজনৈতিক চাপ এবং সামাজিক বিভাজনের বিষয়গুলো তাঁর কাজকে কঠিন করে তুলেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তাঁর হতাশা ও ক্ষোভের কথাও উঠে এসেছে, যদিও তিনি দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার কথা বারবার উল্লেখ করেছেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ড. ইউনূসের নেতৃত্ব বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক বৈঠক ও কূটনৈতিক যোগাযোগে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরছেন এবং বিদেশি অংশীদারদের সহযোগিতা কামনা করছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার একটি সংবেদনশীল সময় অতিক্রম করছে। নিরপেক্ষতা বজায় রেখে প্রশাসন পরিচালনা এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্য গ্রহণযোগ্য পরিবেশ তৈরি করাই হবে এই সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্যের মানদণ্ড।
আরও পড়ুন:








