শনিবার

২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৫ পৌষ, ১৪৩২

হাদি হত্যার মাস্টারমাইন্ড কে এই ‘শাহীন চেয়ারম্যান’?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩:৩৫

আপডেট: ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩:৫২

শেয়ার

হাদি হত্যার মাস্টারমাইন্ড কে এই ‘শাহীন চেয়ারম্যান’?
কেরানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ ওরফে ‘শাহীন চেয়ারম্যান’-এর নাম উঠে এসেছে। একটি গণমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, গোয়েন্দা সূত্র থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এই হত্যাকাণ্ডের কিলিং মিশন বাস্তবায়নে অর্থ ও অস্ত্রের জোগানদাতা ছিলেন শাহীন চেয়ারম্যান নিজেই। একই সঙ্গে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে তার সহযোগী হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার সম্পৃক্ততার তথ্যও পেয়েছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা।

কে এই শাহীন চেয়ারম্যান?

শাহীন আহমেদ দীর্ঘদিন ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে রাজনৈতিক পরিচয়ের পাশাপাশি তিনি এলাকায় ‘মাফিয়া ডন’ হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।

শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে তিনি ছিলেন সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ঘনিষ্ঠ ও ডানহাত হিসেবে পরিচিত। চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারী হিসেবে তার নাম বহু আগে থেকেই পুলিশের তালিকায় ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়।

বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। বরং প্রশাসনিক মহলেও তাকে প্রভাবশালী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি একাধিকবার ভোট কারচুপির মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

দেশ ছাড়ার পর ফের সক্রিয়তা

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্যান্য প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো শাহীন চেয়ারম্যানও সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। সেখানে দীর্ঘদিন পলাতক অবস্থায় নীরব থাকলেও গত তিন থেকে চার মাস ধরে তিনি পুনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন।

সম্প্রতি তিনি দেশের ভেতরে আওয়ামী লীগের তথাকথিত ‘হিটলিস্ট প্ল্যান’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে দেশে থাকা স্লিপার সেলের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন বলে দাবি করা হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ কল ও খুদেবার্তার (এসএমএস) সূত্র বিশ্লেষণ করে হাদি হত্যাকাণ্ডে শাহীন চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তবে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তদন্ত চলমান রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।



banner close
banner close