বুধবার

১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২ পৌষ, ১৪৩২

হাদিকে গুলি: আগের রাতে বান্ধবীকে ‘দেশ কাঁপানো’র ইঙ্গিত ফয়সালের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭:০৬

শেয়ার

হাদিকে গুলি: আগের রাতে বান্ধবীকে ‘দেশ কাঁপানো’র ইঙ্গিত ফয়সালের
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পল্টন এলাকায় শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি চালানোর ঘটনায় তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। গুলি করার আগের রাতে শুটার ফয়সাল তার বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে বলেছিলেন, পরদিন এমন কিছু ঘটবে যা ‘সারা দেশ কাঁপাবে’।

শুক্রবার দুপুর ২:২০ মিনিটে পল্টনের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানো হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে বেরিয়েছে, হামলার পরিকল্পনা বেশ আগে থেকেই হয়েছিল এবং এর জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।

র‌্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে শুটার ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ শিপু, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা, মোটরসাইকেলের মালিক মো. কবির, ফয়সালের বাবা-মা এবং আরও অনেকে। উদ্ধার করা হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, ম্যাগাজিন এবং কয়েক কোটি টাকার চেক।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ফয়সাল ও তার বান্ধবী মারিয়া সাভারের একটি রিসোর্টে রাত কাটিয়েছিলেন। ওই রাতে ফয়সাল জানান, কাল এমন কিছু হবে, সারা দেশ কাঁপবে। পরদিন তারা সকালেই রিসোর্ট থেকে বের হয়ে ঢাকায় এসে হামলা ঘটায়। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট ছিল ভুয়া, যা হামলার পর আসল নম্বর লাগিয়ে পরিবর্তন করা হয়।

তদন্তে মোহাম্মদপুরের এক সাবেক কাউন্সিলরকে হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। অন্তত ২০ সদস্যের একটি সংগঠিত চক্র হত্যাচেষ্টায় জড়িত ছিল। এছাড়া মানবপাচার ও অস্ত্র সরবরাহে বিভিন্ন সহযোগীও রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফয়সালের বাসা থেকে কয়েক কোটি টাকার চেক উদ্ধার হয়েছে। ফয়সালের বাবা-মা ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা গ্রেপ্তার হয়েছে। মোটরসাইকেল মালিক কবির সাত দিনের রিমান্ডে, জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হামলার পূর্বপরিকল্পনা ও সহযোগীদের তথ্য দিয়েছেন। হামলার সময় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে কর্নেল গলির বোনের বাসা থেকে এবং তরুয়ার বিল থেকে।

ডিএমপি গোয়েন্দা বিভাগের সহযোগিতায় তদন্ত চলছে। গোয়েন্দারা সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের অবস্থান চিহ্নিত করতে মাঠে কাজ করছেন। এছাড়া ময়মনসিংহে প্রাইভেট কার চালকসহ সহযোগীদের খোঁজ চলছে, যাদের ধরতে পারলে আরও তথ্য মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ওসমান হাদি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় একটি সুসংগঠিত সন্ত্রাসী চক্রের যোগসাজশ ও পূর্বপরিকল্পনা ছিল। হামলার পিছনে অর্থায়ন ও বিভিন্ন সহযোগী সংযুক্ত রয়েছে। মামলার তদন্ত এখন ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং পরবর্তী দিনগুলোতে আরও গ্রেপ্তার হতে পারে।



banner close
banner close