বুধবার

১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২ পৌষ, ১৪৩২

হাদিকে গুলি: পালানোর আগে ফয়সালের গোপন লেনদেনের তথ্য ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৫:০২

শেয়ার

হাদিকে গুলি: পালানোর আগে ফয়সালের গোপন লেনদেনের তথ্য ফাঁস
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের পলায়ন পরিকল্পনার একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত পার হয়ে দেশ ছাড়ার ঠিক আগমুহূর্তে স্ত্রীর কাছ থেকে নেওয়া ৩০ হাজার টাকাই ছিল মাসুদের শেষ সম্বল। আর এই টাকা লেনদেনের পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে অত্যন্ত গোপনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।

তদন্ত সূত্র বলছে, ঢাকা থেকে সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর হোসেন অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং দুটি প্রাইভেটকার ব্যবহার করেন। পালানোর পথে তারা যখন ঢাকার ধামরাই থেকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন টাকার সংকট দেখা দিলে মাসুদের স্ত্রী সেই প্রাইভেটকার চালকের নম্বরে ৩০ হাজার টাকা পাঠান। ময়মনসিংহে পৌঁছানোর পর শহরের একটি দোকান থেকে সেই টাকা ক্যাশআউট করেন মাসুদ। প্রযুক্তির সহায়তায় এই গোপন লেনদেনের সূত্র ধরেই পুলিশ এখন মাসুদের পলায়ন পথের মানচিত্র স্পষ্ট করছে।

এদিকে, এই হামলার নেপথ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের একজন পলাতক শীর্ষ নেতার ব্যক্তিগত সহকারী এবং এক দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সংশ্লিষ্টতার জোরালো গুঞ্জন ছড়িয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে ফয়সালের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ রাখা আরও দু-তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে। হাদির ওপর হামলার পেছনে অর্থের জোগানদাতা এবং রাজনৈতিক উসকানিদাতাদের মুখোশ উন্মোচনে কাজ করছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।

অন্যদিকে, ফয়সাল করিম মাসুদের বোনের বাসার পাশ থেকে দুটি ম্যাগাজিন ও ১১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফয়সালের মা-বাবাসহ তিনজনকে।

মঙ্গলবার রাতে র‍্যাব–২ এর গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। তারপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন ওসমান হাদি।

পরে ১৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাফর ও ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।

এরপর সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। সেখানে অবতরণের প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে তাকে নিরাপদে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়।



banner close
banner close