আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাঁর ক্ষমা প্রার্থনা গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে অব্যাহতি দেয়।
আজ সোমবার তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বেঞ্চ—বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
টেলিভিশনের এক টক শোতে ফজলুর রহমান বলেছিলেন যে তিনি ট্রাইব্যুনালকে মানেন না—এ মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। গত ৩০ নভেম্বর তাঁকে একাডেমিক সনদ ও বার কাউন্সিল সনদসহ সশরীর হাজির হতে বলা হয়েছিল, যার শুনানি ছিল আজ।
শুনানির শুরুতে প্রসিকিউশন তাঁদের অভিযোগ তুলে ধরে। পরে ট্রাইব্যুনাল সরাসরি ফজলুর রহমানের বক্তব্য জানতে চান। তিনি জানান, ওইভাবে মন্তব্য তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল না এবং ভুলবশত এমন কথা তাঁর মুখে চলে এসেছে। তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন।
আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল জানান, ট্রাইব্যুনালের প্রতি তাঁর মক্কেলের পূর্ণ আস্থা রয়েছে এবং তিনি ঘটনাটি নিয়ে অনুতপ্ত।
বেঞ্চের প্রধান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার বলেন, ফজলুর রহমান একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মানীয় ব্যক্তি, তবে মুক্তিযুদ্ধকে সহজভাবে উল্লেখ করা বা বিচার বিভাগকে হেয় করা সমীচীন নয়।
বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি দেখেছেন ফজলুর রহমান বিভিন্ন প্রতিকূলতার শিকার হয়েছেন; তাই এমন মন্তব্য তাঁর কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত।
ফজলুর রহমান আবারও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আল্লাহর পরে আপনাদেরই সম্মান। ভুলক্রমে কথা এভাবে বেরিয়ে গেছে।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন যুক্ত করেন, ফজলুর রহমান আদালতকে হেয় করার মানুষ নন, তিনি ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকবেন। বিচার বিভাগ ঠিকভাবে কাজ না করলে রাষ্ট্র অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে।
সবশেষে ট্রাইব্যুনাল তাঁর ক্ষমা গ্রহণ করে বলেন, ‘অল দ্য বেস্ট। আরও অনেক দিন সুস্থ থাকুন।’
আরও পড়ুন:








