প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির প্রেসিডেন্ট চ্যাং ওন-সাম - প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) প্রেসিডেন্ট চ্যাং ওন-সাম। গতকাল সোমবার রাজধানীতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সাক্ষাতে তারা উন্নয়ন সহযোগিতা জোরদার, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে নির্বিঘ্ন উত্তরণে সহায়তা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেন।
চ্যাং ওন-সাম বলেন, ‘আবার এই দেশে আসতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে।’ তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের প্রতি কোইকার রাজনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা চ্যাং ওন-সামের সফরের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ ও কোরিয়া আরও দ্রুত অগ্রগতির পথে একসঙ্গে এগিয়ে যাবে।
সরকারের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা কোরিয়ান বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎপাদন ও বাণিজ্যের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশকে বিবেচনা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি উৎপাদন কেন্দ্র হতে চাই। আপনাদের পণ্য এখানে তৈরি করে বিশ্বব্যাপী বিক্রি করতে পারি। আমাদের রয়েছে জনশক্তি, সক্ষমতা এবং কঠোর পরিশ্রমে আগ্রহী তরুণ জনগোষ্ঠী।’ ভাষা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও দক্ষতা উন্নয়নের মতো মানবসম্পদকেন্দ্রিক সহযোগিতা বিস্তারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন ড. ইউনূস।
বাংলাদেশি যুবকদের শিক্ষায়, প্রশিক্ষণে এবং কোরিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও বাড়াতে তিনি কোইকার কোরিয়ান ভাষা শিক্ষা কর্মসূচি সম্প্রসারণের আহ্বান জানান। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা প্রশিক্ষণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নার্স প্রশিক্ষণে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে।’ দক্ষ নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চাহিদার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। এর জবাবে কোইকা প্রেসিডেন্ট দক্ষতা উন্নয়ন ও শিক্ষা খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় বহু মানুষের প্রাণহানি ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। রোববার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুলকে পাঠানো এক বার্তায় তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সুস্থতা ও পুনরুদ্ধার কামনা করেন। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাওয়া এক বার্তায় এ কথা জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বার্তায় বলেন, এই বিপর্যয়ে যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন কিংবা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, তাদের প্রতি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের গভীর সহমর্মিতা রয়েছে। ড. ইউনূস আশ্বস্ত করেন, পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা ও সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
আরও পড়ুন:








