মঙ্গলবার

২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৮ পৌষ, ১৪৩২

জুলাই অভ্যুত্থানকে ‘তথাকথিত’ বলে ধৃষ্টতা দেখানো আদালত অবমাননার শামিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১৫:০০

শেয়ার

জুলাই অভ্যুত্থানকে ‘তথাকথিত’ বলে ধৃষ্টতা দেখানো আদালত অবমাননার শামিল
ছবি: সংগৃহীত

চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সো-কলড বা তথাকথিত বলে ধৃষ্টতা দেখানো আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

রবিবার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে যেসব আইনসম্মত সংজ্ঞা বা উপায় আছে সেসব অবশ্যই করা যাবে। কিন্তু কোনো বিচারপ্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করা তথা আজকের রাষ্ট্রটা যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, সেটা জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত আরেকটি বাংলাদেশ। সে মহান অর্জনের পেছনে ১৪০০ মানুষের রক্তদান, ২৫ হাজারের মতো মানুষের অঙ্গহানি ও অজস্র মানুষের চোখের পানি ঝরেছে। সেই মহান অভ্যুত্থান বা বিপ্লবকে সো-কলড বলা ধৃষ্টতা। এটা আদালত অবমাননা। এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। এ ধরনের কথা আদালতে বলার অধিকার কোনো আসামিরই নেই।

তাজুল ইসলাম বলেন, এই ট্রাইব্যুনাল সংবিধানের অধীনে প্রতিষ্ঠিত আদালত। এই ট্রাইব্যুনালের আইনটি বিশেষ আইন ও সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত। অতএব এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে দাঁড়িয়ে কোনো কথা বলার অধিকারই আসামির নেই। তবে আইনের পরিকাঠামোর মাধ্যমে যেসব অধিকার রয়েছে তা অবশ্যই পাবেন (আসামি)। অর্থাৎ নিজের পক্ষে সাক্ষ্য উপস্থাপনের সুযোগ পাবেন। প্রসিকিউশনের উপস্থাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভুলত্রুটি চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। এসবের ব্যাপারে পাল্টা যুক্তিও দেওয়া যাবে। কিন্তু আইনকে বা রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করার অথরিটি বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের নেই।

এদিন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বা বিচারের আদেশের বিরুদ্ধে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর রিভিউ আবেদনটি খারিজ করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। অন্য সদস্য হলেন জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

পরে ইনুর বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য সোমবার (১ ডিসেম্বর) দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। ইনুর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও আইনজীবী সিফাত মাহমুদ।

গত ২৭ নভেম্বর জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সো-কলড বলে বিচার শুরুর আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ করেন ইনু। তবে তার এমন মন্তব্যকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলে আবেদনটি বাতিল চান প্রসিকিউশন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনটি আজ খারিজ করেন ট্রাইব্যুনাল-২।

এর আগে, গত ২ নভেম্বর জাসদের এই সভাপতির বিরুদ্ধে আনা আটটি অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেয়া হয়। এছাড়া সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করা হয়। ওই দিন আটটি অভিযোগই ইনুকে পড়ে শোনান বিচারক। একপর্যায়ে নিজেকে পুরোপুরি নির্দোষ দাবি করেন হাসানুল হক ইনু। ২৮ অক্টোবর ইনুর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। শুনানিতে কোনো অভিযোগ সত্য নয় জানিয়ে নিজের ক্লায়েন্টের অব্যাহতির আবেদন করেন তিনি। তবে ১৪ দলীয় জোটের শরিক নেতা হিসেবে কোনো দায় ইনু এড়াতে পারেন না বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন। ২৩ অক্টোবর ইনুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।



banner close
banner close