শুক্রবার

২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিমকে নিয়ে অপপ্রচার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১০:৩১

শেয়ার

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিমকে নিয়ে অপপ্রচার
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম

বিসিএস ১৭তম ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল করিম মল্লিক ১৯৯৮ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। মেধাবী এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকেই শুরু হয় নানা ষড়যন্ত্র। প্রায় দেড় যুগ তিনি নির্যাতন ও অবহেলার মধ্যে কাটিয়েছেন। পদোন্নতি বঞ্চনার পাশাপাশি তাকে পুলিশের কম গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইউনিটে পদায়ন করা হতো। প্রয়োজন সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হতো না—এমনকি নিজের বাবা, মা ও বড় ভাইয়ের মৃত্যুর সময়ও তিনি ছুটি পাননি। টানা ১৮ বছর এই পরিস্থিতি সহ্য করার পর ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটে। এরপর তাকে ডিআইজি পদে উন্নীত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

দায়িত্ব গ্রহণের পর পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল করিম ডিবিকে কলঙ্কমুক্ত করার উদ্যোগ নেন। একদিকে ভেঙে পড়া পুলিশ বাহিনীকে কর্মমুখী করা, অন্যদিকে অপকর্মের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত ডিবিকে পুনর্গঠনের কঠিন চ্যালেঞ্জ তিনি গ্রহণ করেন। সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুনের সময়ে যে সব অনিয়ম চলত, সেগুলো দূর করার জন্য তিনি কার্যকর পদক্ষেপ নেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ববণ্টন থেকে শুরু করে কাজের ধরন ও নীতিমালার প্রায় সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তন আনেন।

এর মধ্যেই হঠাৎ, কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই তাকে ডিবি থেকে সরিয়ে দীর্ঘদিন ডিএমপি সদর দপ্তরে সংযুক্ত রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে, গত মে মাসে তাকে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে পদায়ন করা হয়।

সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই রেজাউল রেঞ্জ ডিআইজি হিসেবে ১৩টি জেলাকে নতুনভাবে সাজানোর উদ্যোগ নেন। তার দক্ষ নেতৃত্বে প্রতিটি জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়। অপরাধ দমন ও অপরাধী গ্রেপ্তারে দ্রুত অগ্রগতি দেখা দেয়। অল্প সময়ের মধ্যেই পুরো রেঞ্জজুড়ে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসে। দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে তিনি শুধু কাগজে-কলমেই নয়, মাঠে সরাসরি উপস্থিত থেকেও সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিনি নিয়মিত রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তদারকি করেন এবং একাধিক আলোচিত অভিযানের নেতৃত্বও দেন।

গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের একদল দুষ্কৃতকারীকে দমন করতে তিনি টানা তিন দিন সশরীরে সেখানে অবস্থান করেন। পারিবারিক জীবনে নানা প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও দায়িত্ব পালন থেকে কখনো পিছিয়ে যাননি। তার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে জটিল রোগে ভুগছেন, তবুও তিনি নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

কিন্তু তবুও ষড়যন্ত্র তাকে ঘিরে ধরছে। যখন তিনি সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন, ঠিক তখনই একটি মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। পুলিশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তোলা তার ছবি ও ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তিনি হুমকি-ধমকিও পাচ্ছেন।

জানা গেছে, মাদারীপুরের শিবচরে একটি বড় রাজনৈতিক দলের বিতর্কিত নেতার মনোনয়ন স্থগিত করা হয়। ওই নেতার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ঘরানার বহু ব্যক্তির সঙ্গে তোলা অসংখ্য ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর দলের হাইকমান্ড তার মনোনয়ন স্থগিত করে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে—রেজাউল করিম মল্লিকই নাকি এ মনোনয়ন স্থগিত করানোর পেছনে ভূমিকা রেখেছেন। আর এ ধারণাকে কেন্দ্র করেই চক্রটি পুলিশের এই কর্মকর্তাকে নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাতে শুরু করেছে।

সম্প্রতি মাদারীপুর জেলা বিএনপির নেতা সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী (লাভলু) ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিককে নিয়ে ছড়ানো মিথ্যা, বানোয়াট ও অশালীন অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একজন সৎ মানুষকে যদি অসৎ বানানোর চেষ্টা করা হয় তবে আমার সঙ্গে সঙ্গে সবারই প্রতিবাদ করা উচিত। এখন পর্যন্ত শতভাগ সৎ পুলিশ অফিসার রেজাউল। তার এত বছরের কর্মজীবনে এখন পর্যন্ত খারাপ কিছু শুনিনি

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় দেন আদালত। আমরা ভেবেছিলাম ফরিদপুরে অনেক কিছু ঘটে যাবে। কিন্তু রেজাউলের কঠিন পদক্ষেপে একটা ঘটনাও ঘটেনি ফরিদপুর এলাকায়। এমন একজন কর্মকর্তার জন্য আমাদের শিবচরবাসীর গর্ব করা উচিত।



banner close
banner close