সোমবার

১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১ পৌষ, ১৪৩২

ওসি ও এএসআই ছয়টি মরদেহ পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেন: রাজসাক্ষী শেখ আবজালুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১৪:০২

শেয়ার

ওসি ও এএসআই ছয়টি মরদেহ পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেন: রাজসাক্ষী শেখ আবজালুল হক
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট আন্দোলন সময় আশুলিয়ায় পুড়িয়ে ফেলা শহীদদের জন্য কিছু করতে না পারায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেরসহ তাদের পরিবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন রাজসাক্ষী শেখ আবজালুল হক।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২-এ জবানবন্দি শেষে ক্ষমা চান তিনি। ট্রাইব্যুনাল-২-এর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেলে তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এদিন আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন আবজালুল।

জবানবন্দিতে তিনি জানান, যদিও মরদেহ পোড়ানোর সময় তিনি ছিলেন না।

আপিল না করলে গ্রেপ্তার হলেই শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর তবে ১৫ আগস্ট নিজের ইস্যু করা অস্ত্র জমা দিতে এসে লাশ পুড়িয়ে দেয়ার কথা জানতে পারেন। আশুলিয়া থানার তৎকালীন ওসি সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিৎ মিলে ৬টি মরদেহ পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেন বলেও জানান তিনি। পরিশেষে ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চান তিনি।

চলতি বছরের ২১ আগস্ট এ মামলায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। ওই সময় উপস্থিত আট আসামির সাতজনই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তবে দোষ স্বীকার করেন এসআই শেখ আবজালুল হক। একই সঙ্গে রাজসাক্ষী হতে চেয়ে মামলার ব্যাপারে যা জানেন সব আদালতের কাছে বলতে চান। পরে তার দোষ স্বীকারের অংশটুকু রেকর্ড করা হয়। একই সঙ্গে লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজসাক্ষী হওয়ার অনুমতি পান তিনি।

এর আগে গত ২১ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর তারিখ ধার্য করা হয়। সেদিন বিচারকার্যের শুরুতেই আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে দেয়া হয় এবং উপস্থিত আট আসামির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়।

গত ১৩ আগস্ট স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষ হয়। ওই দিন মামলার আট আসামিকে হাজির করা হয়। পাশাপাশি পলাতক থাকা সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আটজনকেও হাজির করার কথা ছিল; কিন্তু তারা উপস্থিত না হওয়ায় তাদের পক্ষে সরকারি খরচে দুজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।

এই মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন—ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল এবং কনস্টেবল মুকুল। সাবেক এমপি সাইফুলসহ পলাতক আট আসামিকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়। এই আদেশ ১৬ জুলাই ট্রাইব্যুনাল-২ দ্বারা জারি করা হয়।



banner close
banner close