অর্থনীতিবিদ ও গণনীতি বিশ্লেষক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশে নির্বাচনের পক্ষে এখন বিস্তৃত ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। শুধু রাজনৈতিক দলই নয়, বেসামরিক প্রশাসন, সামরিক বাহিনী, পেশাজীবী সমাজ, ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এবং তরুণ প্রজন্মও যথাসময়ে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে রয়েছে।
শনিবার দুপুরে রাজশাহীতে ‘নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রাক-নির্বাচনী উদ্যোগ’-এর আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। সভায় রাজশাহী অঞ্চলের অংশগ্রহণকারীরা সংস্কার, সুশাসন, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান এবং আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, সংসদে যাদের প্রতিনিধিত্ব নেই, প্রতিবন্ধী, সমতল ও পাহাড়ি অঞ্চলের আদিবাসীসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারেও এসব বিষয় অগ্রাধিকার পাওয়া প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পক্ষের শক্তি এখন দেশের ইতিহাসে যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। বর্তমান সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসও সময়মতো নির্বাচন চান, যা নির্বাচন আয়োজনের অনুকূল পরিবেশকে আরও জোরদার করেছে।
সভায় অংশগ্রহণকারীদের মতামতের বিষয়ে ড. দেবপ্রিয় জানান, তারা এমন নির্বাচন প্রত্যাশা করেন, যেখানে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হবেন। নির্বাচনের ব্যয় কমানো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার রোধ, উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন এবং জনপ্রতিনিধিদের বার্ষিক জবাবদিহি নিশ্চিত করা, এসব বিষয়কে তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।
তিনি জানান, রাজশাহী অঞ্চলের বিশেষ চ্যালেঞ্জ হিসেবে মরুকরণ, পদ্মা–তিস্তার পানি সংকট, জ্বালানি সমস্যা, শিল্পায়নের অভাব, যোগাযোগব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা, স্বাস্থ্যসেবা ও মানসম্মত শিক্ষার ঘাটতি এবং নিরাপত্তাহীনতার কথা উঠে এসেছে। জনগণ এসব সমস্যাকে সুশাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও কার্যকর প্রশাসনের সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করেন।
পরামর্শ সভায় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খানসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার প্রতিনিধিরা মতামত দেন। এসব মতামত সংকলন করে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ‘নাগরিক ইশতেহার’ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।
আরও পড়ুন:








