এখনো আওয়ামী লীগের দোসরমুক্ত হয়নি দেশের পরিবহন খাত। যেসব মালিক গত ১৬ বছরে বিভিন্ন হরতাল-অবরোধে রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে আন্দোলন ব্যাহত করেছে, এখন তারাই আওয়ামী লীগের ডাকে সাড়া দিয়ে গাড়ি বন্ধ রেখে আন্দোলন সফল করছে বলেও মনে করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
ঢাকা থেকে সারাদেশে রুট রয়েছে ৪’শর কাছাকাছি। বিভিন্ন পরিবহনের ব্যানারে একাধিক মালিকের গাড়িও চলছে। এর বেশিরভাগ মালিকই কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী অথবা দলটির রাজনীতির সাথে জড়িত। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির তথ্য বলছে— ৩৮৫ রুটের মধ্যে ৩৪০টির মালিকানা পুরোপুরি আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে।
এমনকি সুনির্দিষ্ট কিছু পরিবহন মালিকেরা ৫ আগস্টের পরও আওয়ামী লীগের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ এ এস এম আহম্মেদ খোকন।
এই পরিস্থিতিতে, পরিবহন খাত আওয়ামী প্রভাবমুক্ত করতে আরও সময় লাগবে বলেও মনে করছেন তিনি।
এদিকে পরিবহনের মালিক আওয়ামী লীগের হলেও, নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহনের সহ-সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের মাসুদ।
এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন এই খাতের নেতারা। কারণ, গত ১৬ বছরে পরিবহন খাতই ছিল আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য সৃষ্টির অন্যতম হাতিয়ার।
এ সপ্তাহে মাত্র তিন দিনে অন্তত বিশটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এর তালিকাও এসেছে বাংলা এডিশনের হাতে। তবে এসব ঘটনায় নেপথ্যে আওয়ামী লীগের পরিবহন মাফিয়ারা জড়িত বলে মনে করছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম।
একই সঙ্গে হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, দোসর এবং শঙ্কামুক্ত পরিবহন খাত গড়ে তুলতে বর্তমান মালিকরা কাজ করলেও সরকারের কাছ থেকে আশানুরূপ সহযোগিতা পাচ্ছেন না। এমনকি ঝুঁকি কমাতেও এগিয়ে আসেনি সরকার।
১৬ বছরে কী পরিমাণ পরিবহন রুট পারমিট নিয়ে দেশে চলেছে, তার মালিকানার সমীকরণ মেলানো কঠিন। তাই চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিতে পারে আওয়ামী পরিবহন মাফিয়ারা। এই পরিস্থিতিতে, নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:








