বৃহস্পতিবার

১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২ পৌষ, ১৪৩২

“খতমে নবুওয়ত ও কাদিয়ানী ধর্ম প্রসঙ্গে নাগরিক ভাবনা” শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত: ইন্তিফাদা বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর, ২০২৫ ২২:২৯

শেয়ার

“খতমে নবুওয়ত ও কাদিয়ানী ধর্ম প্রসঙ্গে নাগরিক ভাবনা” শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত: ইন্তিফাদা বাংলাদেশ
প্রতিকি ছবি

বাংলাদেশের আলোচিত ও সংবেদনশীল ধর্মীয় ইস্যু “খতমে নবুওয়ত ও কাদিয়ানী ধর্ম প্রসঙ্গে নাগরিক ভাবনা” নিয়ে আজ (১২ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ফার্সের বিস্ট্রো হলে এক গুরুত্বপূর্ণ গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ইন্তিফাদা বাংলাদেশ।

বৈঠকে দেশের বিশিষ্ট আলেম, শিক্ষাবিদ, আইনজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।

সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মীর ঈদ্রিস নদভী এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্তিফাদা বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু তাসমিয়া আহমেদ রফিক।

মূল আলোচ্য বিষয়

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও “মুসলিম” শব্দের ধর্মতাত্ত্বিক অর্থ ও সীমা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা জরুরি। তাদের মতে, কাদিয়ানী সম্প্রদায় ইসলামের মৌলিক আকীদাহ ‘খতমে নবুওয়ত’ অস্বীকার করে, ফলে তারা ইসলাম ধর্মের গণ্ডির বাইরে অবস্থান করে।

বক্তারা জোর দিয়ে বলেন— বাংলাদেশের উচিত কাদিয়ানীদের পৃথক ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা। তবে তারা স্পষ্ট করেন যে এই দাবি কোনো নাগরিক অধিকারবিরোধী নয়; বরং ধর্মীয় পরিচয় ও নাগরিক পরিচয়ের মধ্যে স্বচ্ছতা বজায় রাখার আহ্বান।

তারা আরও বলেন, এই ইস্যুটি কোনো ফিকহি মতপার্থক্য নয়, বরং ঈমান ও আকীদার মৌলিক প্রশ্ন। নবুয়তের চূড়ান্ততা অস্বীকারের কারণে কাদিয়ানীদের মুসলিম বলা ইসলামী শরীয়ত ও যুক্তি—দুইয়েরই পরিপন্থী।

বক্তাদের পর্যবেক্ষণ

বক্তারা উল্লেখ করেন, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বহু মুসলিম দেশেই কাদিয়ানীরা মুসলিম হিসেবে স্বীকৃত নয়। বাংলাদেশেও ১৯৮৫ ও ১৯৯৩ সালের হাইকোর্টের রায়ে খতমে নবুওয়ত অস্বীকারকারীদের ইসলামের বাইরে ঘোষণা করা হয়েছে।

বক্তারা বলেন, “রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের আহ্বান—কেউ যেন কারো বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ না করে, বরং বিশ্বাস ও পরিচয়ের স্বচ্ছতা বজায় রাখে। ইসলামকে বিভ্রান্তি বা ভিন্ন পরিচয়ের আড়ালে বিকৃত হতে দেওয়া যাবে না।”

বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবনা

১. জাতীয় সংসদে প্রস্তাব উত্থাপন: কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম সংখ্যালঘু হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য।

২. নিবন্ধন ও সরকারি নথি সংস্কার: নাগরিক পরিচয়ে তাদের ধর্মীয় বাস্তবতা প্রতিফলিত করার আহ্বান।

৩. ধর্মীয় পরিভাষা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন: ‘মসজিদ’, ‘ইমাম’, ‘শাহাদাহ’ প্রভৃতি ইসলামী পরিভাষার অপব্যবহার রোধে আইন প্রণয়নের দাবি।

উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ

আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, ড. মোহাম্মদ আবু সায়েম, ড. মোস্তফা মনজুর, ডা. মেহেদি হাসান, মহিউদ্দিন আল ফারুক, ড. মাওলানা শহিদুল ইসলাম ফারুকী, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানি, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহিল বাকি নদভী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা জুলফিকার আহমদ নদভী, মুফতি আবদুল্লাহ শিহাব, মুফতি শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, এই নাগরিক সংলাপ জাতীয়ভাবে একটি যুক্তিসঙ্গত, শান্তিপূর্ণ ও আইনি সমাধানের পথ দেখাবে এবং বাংলাদেশের ইসলামী পরিচয়ের স্বচ্ছতা রক্ষায় সহায়ক হবে।

— ইন্তিফাদা বাংলাদেশ, প্রেস বিজ্ঞপ্তি



banner close
banner close