বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি পশ্চিমবঙ্গে ‘খুব কম সময়ের ব্যবধানে’ নতুন একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত। দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, ‘চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে’ খুবই অল্প সময়ের মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় এই ঘাঁটি চালু করা হয়েছে। সীমান্তরেখা বরাবর ‘প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে’ আসামের ধুবড়িতেও একটি সামরিক স্টেশন স্থাপনের কাজ চলছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর সি তিওয়ারি গত বৃহস্পতিবার এই ঘাঁটির ভিত্তি স্থাপন করেন। এর নাম রাখা হয়েছে ‘লাচিত বোরফুকান মিলিটারি স্টেশন’। আসামের ১৭ শতকের কিংবদন্তি কমান্ডার লাচিত বোরফুকানের নামে এর নামকরণ করা হয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে, তিনি মোগল বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল তিওয়ারি সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযাণিক প্রস্তুতি এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগগুলোর অগ্রগতি মূল্যায়ন করেন।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম. রাওয়াত বলেছেন, স্টেশনটি স্থাপন ভারতীয় সেনাদের আঞ্চলিক অপারেশনাল সক্ষমতা এবং অবকাঠামো আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তেজপুরভিত্তিক চতুর্থ কোরের অধীন স্টেশনটি বনুমনি পার্ট-ওয়ান এবং বনুমনি পার্ট-টু গ্রামের সরকারি জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে। দ্য আসাম ট্রিবিউন-এর তথ্যমতে, বিলাসীপাড়া রেভিনিউ সার্কেলের সপ্তগ্রামে ১৯৬ বিঘা জমির ওপর স্টেশনটি নির্মিত হচ্ছে।
এখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি বিশেষায়িত ‘প্যারা এসএফ ইউনিট’-সহ প্রায় দেড় হাজার সেনাসদস্য থাকবে। স্টেশনটি দ্রুত প্রতিক্রিয়া, নজরদারি এবং উচ্চ প্রভাবযুক্ত ট্যাকটিক্যাল অভিযানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আসামে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্তের সবচেয়ে কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সামরিক স্টেশনটি শিলচরের মাসিমপুরে অবস্থিত, যার অবস্থান বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে। সেই তুলনায় নির্মিত লাচিত বোরফুকান মিলিটারি স্টেশন বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে বেশ কাছাকাছি।
এ বিষয়ে বাংলা এডিশন-এর সঙ্গে কথা বলেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্ণেল হাসিনুর রহমান। তিনি বলেন, বিষয়টা হালকাভাবে না দেখে শিগগিরই বিদেশি শক্তির সঙ্গে সার্বভৌমত্ব চুক্তি করা উচিত।
এছাড়া, দেশের যেসব সেনা ঘাঁটি অলস পড়ে আছে, সেগুলোকে সরিয়ে নিয়ে পঞ্চগড় এবং লালমনিরহাটে মোতায়েনের পরামর্শও দিয়েছেন এই সেনা কর্মকর্তা। একই সঙ্গে দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতা বাড়ানোর কথাও বলেছেন কর্ণেল হাসিনুর রহমান।
এদিকে, আরেক সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর ডেল এইচ. খান বলেন, ভারতের কোনো পরিকল্পনাকেই হালকাভাবে নেওয়া উচিত হবে না। এই ঘাঁটি নির্মাণের ফলে একটি আক্রমণাত্মক মনোভাবের বার্তাই দিচ্ছে ভারত। পাশাপাশি সীমান্তে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীকে আরও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারবে ভারত।
বিস্তারিত: https://www.youtube.com/watch?v=aStkLnupoow
আরও পড়ুন:








