রাজধানী ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে ‘অজ্ঞান পার্টি’ চক্রের ৯ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চালকদের চেতনানাশক খাইয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করতো চক্রটি।
শনিবার ডিএমপি মিডিয়া শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন: মো. করিম মিয়া (৪৩), মো. মান্নান খান (৬৬), মনসুর ওরফে মোশারফ (৪৩), মজিবর (৫৪), জসিম (৩৭), মনির (৪৫), মো. জামাল হোসেন (৬৬), তৌহিদুল ইসলাম রবিন (২৬) ও ইউনুস (৫০)।
ডিএমপি জানায়, গত ১ অক্টোবর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মোহাম্মদপুরের আল্লাহ করিম বাসস্ট্যান্ডে চা পান করছিলেন সিএনজি চালক মো. শাহজালাল। এ সময় যাত্রীবেশে এক ব্যক্তি ৩০০ টাকায় আটিবাজারে যাওয়ার কথা বলে সিএনজি ভাড়া নেয়। এরপর তারা চা খায়। একপর্যায়ে কৌশলে চালকের চায়ে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দেয়া হয়।
চা পান করার কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহজালাল অচেতন হয়ে পড়েন। বসিলা মেট্রো হাউজিং গেটের কাছে গাড়ি থামানোর পর চক্রের সদস্যরা তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগে থাকা ৩ হাজার ৫৫০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
এরপর ওই চক্রটি চালকের মোবাইল থেকে সিএনজির মালিক জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে জয় তাদের দেয়া বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠান। একই দিন রাত ১০টার দিকে চক্রটি ফোনে জানায়, সিএনজিটি মোহাম্মদপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
ডিবি জানায়, তেজগাঁও বিভাগের একটি চৌকস দল সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করে।
পরে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে করিম মিয়া, মান্নান খান, মনসুর, মজিবর, জসিম ও মনিরকে গ্রেফতার করা হয়।
তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন দুপুর পৌনে একটার দিকে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকায় দ্বিতীয় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতা মো. জামাল হোসেন, সহযোগী তৌহিদুল ইসলাম রবিন ও ইউনুসকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি সিএনজি, ১ হাজার ৯০০ পিস চেতনানাশক ট্যাবলেট এবং নগদ এক লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিএমপি জানায়, গ্রেপ্তাররা দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীবেশে সিএনজি ভাড়া করে চালকদের চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে সিএনজি ছিনতাই করতো। এ চক্রটি ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে সক্রিয়।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানায় ডিবি।
আরও পড়ুন:








