সংসদীয় ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করেছে। এই নীতিমালা শুধু দেশীয় পর্যবেক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য হবে। নীতিমালা অনুযায়ী, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা জানা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বাড়িয়ে ভোটারের আস্থা বৃদ্ধি করা।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পর্যবেক্ষক নীতিমালা জারির বিষয়ে জানান।
পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে নিবন্ধনের জন্য দৈনিক পত্রিকায় ১৫ দিন সময় দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। আগ্রহী সংস্থাকে নির্ধারিত ফরম এবং বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত দলিলাদিসহ আবেদন জমা দিতে হবে।
বেসরকারি সংস্থা যারা গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে এবং যাদের নিবন্ধিত গঠনতন্ত্রে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নাগরিকদের মধ্যে তথ্য প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণের অঙ্গীকার রয়েছে, কেবল তারাই আবেদন করতে পারবে।
প্রতিটি সংস্থার নিবন্ধনের মেয়াদ অনুমোদনের তারিখ থেকে পাঁচ বছরের জন্য বহাল থাকবে। মেয়াদ শেষ হলে কিছু শর্ত সাপেক্ষে নবায়ন করা যাবে। এ ছাড়া নিবন্ধন প্রাপ্তির পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে জাতীয় সংসদের যেকোনো একটি সাধারণ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের অন্তত চারটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে দাখিল করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রতি দুই বছর অন্তর দ্বি-বার্ষিক প্রতিবেদন কমিশন সচিবালয়ে দাখিল করতে হবে। সংস্থাটিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ও দেশের প্রচলিত আইন-বিধি মানিয়া চলতে হবে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে একজন ব্যক্তির লিখিত যোগ্যতা থাকতে হবে। সেগুলো হলো:
১. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
২. বয়স ২১ বছর বা তদূর্ধ্ব হতে হবে।
৩. ন্যূনতম উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
৪. কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হতে পারবে না।
৫. কোনো রাজনৈতিক দল বা দলের অঙ্গসংগঠন বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সাথে ব্যক্তিগত স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারবে না।
৬. রাজনৈতিক দল বা এর অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কেউ পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না।
৭. পর্যবেক্ষক মোতায়েনের একক ইউনিট হবে উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানা অথবা সংসদীয় নির্বাচনি এলাকা।
৮. পর্যবেক্ষকদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার বাসিন্দা বা ভোটার হওয়া চলবে না।
৯. নিবন্ধিত পর্যবেক্ষক সংস্থা নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরের দিন, অর্থাৎ তিন দিনের জন্য পর্যবেক্ষক মোতায়েন করতে পারবে।
নীতিমালা লঙ্ঘন বা রাষ্ট্র বা শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে কমিশন সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ১০ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব চেয়ে নোটিশ পাঠাবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে বা শুনানিতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিশন সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। এক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
আরও পড়ুন:








