তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে দায়ের করা চূড়ান্ত আপিলের শুনানি পঞ্চম দিনের মতো চলছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) চতুর্থ দিনের শুনানি শেষে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তৃতীয় দিনের (২৩ অক্টোবর) শুনানিতে ইন্টারভেনর হিসেবে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী। এর আগের দিন (২২ অক্টোবর) রিটকারী ড. বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে শুনানি শেষ করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। আর ২১ অক্টোবর শুরু হয়েছিল এই আপিলের প্রথম দিনের শুনানি।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেয় আপিল বিভাগ। পরে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট নাগরিক, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
এর মধ্যে ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঙ্গে যারা আবেদন করেন তারা হলেন, তোফায়েল আহমেদ, এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া এবং জাহরা রহমান। ১৬ অক্টোবর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আলাদাভাবে আপিল বিভাগে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। একইভাবে ২৩ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও আবেদন দাখিল করেন। পরে নওগাঁর রানীনগরের মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও একই রকম আবেদন করেন।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। তবে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানির পর ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ রিটটি খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেয়ে আবেদনকারীরা ২০০৫ সালে আপিল দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানির পর ২০১১ সালের ১০ মে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে।
পরে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত করা হয়। গেজেট প্রকাশিত হয় একই বছরের ৩ জুলাই।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর পুনরায় রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হয়। সেই আবেদনগুলোর ওপরই চলছে বর্তমানে আপিল বিভাগের এই পূর্ণাঙ্গ শুনানি।
আরও পড়ুন:








