সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার লিয়াজোঁ অফিসার পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর নিকট হতে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ অর্জনকারী ব্যক্তির ০৫ কোটি টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করলো সিআইডি।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত এই বাজেয়াপ্তের আদেশ প্রদান করেন। একই সাথে বিজ্ঞ আদালত উক্ত আসামীর বিদেশ গমনাগমনেও নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছেন।
চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ অর্জন করা এই ব্যক্তির নাম মোতাল্লেছ হোসেন। এপ্রেক্ষিতে সিআইডি কর্তৃক পল্লবী থানায় প্রতারক মোতাল্লেছ হোসেনের নামে দায়ের করা মানিলন্ডারিং মামলার অগ্রগতি হিসেবে সিআইডির প্রচেষ্টায় উক্ত অর্থ বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হলো।
মামলাটি তদন্তকালে উক্ত ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সিআইডির আবেদনক্রমে বিজ্ঞ আদালত পারমিশন পিটিশন নম্বর ৭৫৮/২০২৫, আদেশ নং ০২, তারিখ- ০৯/১০/২০২৫ খ্রি. মূলে উক্ত আসামির বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের স্থিতি প্রায় ০৫ কোটি টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ প্রদান করেছেন, যা ইতোপূর্বে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের আবেদনের প্রেক্ষিতে ফ্রিজ করা ছিল। আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক পিএলসিতে ০১টি, সিটি ব্যাংক পিএলসিতে ০২টি, প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসিতে ০২টি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসিতে ০২টি ও সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে ০১টি অর্থাৎ অভিযুক্তের মোট ০৮টি অ্যাকাউন্টে উক্ত অর্থ সংরক্ষিত ছিল।
সিআইডির তদন্তে উঠে আসে, মোতাল্লেছ হোসেন নিজেকে খালেদা জিয়ার লিয়াজোঁ অফিসার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। তদন্তকালে আরও প্রকাশ পায়, মোতাল্লেছ হোসেনের নামে থাকা এম এল ট্রেডিং নামক প্রতিষ্ঠানটি বাস্তবে অস্তিত্বহীন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও, বাস্তবে প্রতিষ্ঠানটির কোনো কার্যক্রম বা ঠিকাদারি ও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পাওয়া যায়নি।
মোতাল্লেছ হোসেন নিজেকে কখনও গার্মেন্টস মালিক, কখনও চা-বাগানের উদ্যোক্তা বা ঠিকাদারি ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। তার নামে খোলা ব্যাংক হিসাবে প্রায় ২০ কোটি টাকার লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে তিনি বিএনপির দলীয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা বলে তার নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেন এবং তা আত্মসাৎ করেন।
উল্লেখ্য, এ ঘটনায় গত ০৭/০৯/২০২৫ খ্রি. তারিখে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২)/৪(৪) ধারা অনুযায়ী পল্লবী থানায় মামলা (মামলা নম্বর: ১৯) রুজু করা হয়েছিল। সেই মামলায় মোতাল্লেছ হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রতারণা চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন:








