শুক্রবার

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩ পৌষ, ১৪৩২

কেরানীগঞ্জে অবৈধ সিসা কারখানা আবারও সচল, জনস্বাস্থ্যে চরম ঝুঁকি

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৮:৪৮

শেয়ার

কেরানীগঞ্জে অবৈধ সিসা কারখানা আবারও সচল, জনস্বাস্থ্যে চরম ঝুঁকি
ছবি: বাংলা এডিশন

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরের করেরগাঁও এলাকায় বন্ধ হওয়ার পরও আবারও সচল হয়েছে একাধিক অবৈধ সিসা কারখানা। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া ও প্রশাসনের একাংশকে ম্যানেজ করেই রাতের আঁধারে এসব কারখানা চালু রাখা হচ্ছে। এতে নির্গত কালো ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাসে আশপাশের অন্তত ১০ গ্রামের কয়েক লক্ষাধিক মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দিনে শ্রমিকরা পুরোনো ব্যাটারি ভেঙে প্লেট ও অ্যাসিড আলাদা করছেন। আর রাতে পুড়িয়ে সিসা গলানো হয়। এতে পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। বিলের পানির রং কালো হয়ে গেছে, মাছ মারা যাচ্ছে। শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালা, চর্মরোগসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর মাঝে মাঝে প্রশাসনের অভিযান চালানো হলেও তা কেবল লোক দেখানো। অভিযান শেষে রাতেই আবার কারখানাগুলো চালু হয়। এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, “জরিমানা করেই প্রশাসন চলে যায়, পরে সব আগের মতো চলে। আইনের প্রয়োগ দুর্বল বলেই এসব কারখানা বারবার চালু হয়।

শ্রমিকরাও ঝুঁকিতে কাজ করছেন। এক শ্রমিক জানান, ১৫ হাজার টাকার বেতনের জন্য তারা বাধ্য হচ্ছেন সিসা পোড়ানোর কাজে, যদিও শ্বাসকষ্ট ও চর্মরোগে ভুগছেন।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিসা মানবদেহে প্রবেশ করলে কিডনি, লিভার ও স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন মুনমুন জানান, “সিসা মাটিতে পড়লে ফসল উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। হলেও তা মানুষের জন্য বিষে পরিণত হবে।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে কেরানীগঞ্জে রাজস্ব সার্কেল দক্ষিণ সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফতাব আহমেদ বলেন, “পরিবেশ দূষণকারী কোনো কারখানা চলতে দেওয়া হবে না। অবৈধ সিসা কারখানার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



banner close
banner close