বুধবার

১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২ পৌষ, ১৪৩২

'গোপালগঞ্জ দ্বন্দ্ব আড়াল করতে ফের আইজিপি করা হয় আমাকে'

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৭:৪৮

শেয়ার

'গোপালগঞ্জ দ্বন্দ্ব আড়াল করতে ফের আইজিপি করা হয় আমাকে'
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জেরা দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, আপত্তি সত্ত্বেও পুলিশে গোপালগঞ্জের দ্বন্দ্ব আড়াল করতে তাকে পুনরায় আইজিপি করা হয়েছিল। চাকরির মেয়াদ শেষে দুই দফা মেয়াদ এক্সটেনশন (বর্ধিত করা) করা হয়। প্রথম দফায় রাজি থাকলেও দ্বিতীয়বার তিনি রাজি ছিলেন না।

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার জেরায় এমন দাবি করেছেন আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি মামুন।

সাক্ষীর জেরায় মামুন বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় আমি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে কর্মরত ছিলাম। তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী রাতের বেলায় ব্যালট বক্সে প্রায় ৫০ শতাংশ -এর মতো ভোট রাখার পরামর্শ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েছেন বলেন শুনেছি। মাঠ পর্যায়ে সরকারের পক্ষ থেকে রাতে ব্যালট বক্সে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা পাঠানো হয়। রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতা ও উদ্যোগে জেলা প্রশাসন, ডিসি, ইউএনও, এসিল্যান্ড, এসপি ও থানার ওসিরা মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে পুলিশের বিপিএম ও পিপিএম পদক নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্বাচনসহ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সক্রিয় পুলিশ অফিসারদেরকে বিবেচনা করা হতো। এক্ষেত্রে সঠিকভাবে পেশাদারিত্ব দেখানো হয়নি। তবে আমিও ওই নির্বাচনের আগে-পরে ৩টি বিপিএম ও পিপিএম পদক পেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে এই পদকগুলো কেন দেওয়া হয়েছিল, তা আমি এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলতে পারবো না।

পুলিশের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে সাবেক এই আইজিপি বলেন, ২০১৮ সালের পর পুলিশ বাহিনীতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও প্রভাব আরও বেশি বৃদ্ধি পায়। কতিপয় পুলিশ অফিসার প্রভাবশালী পুলিশ অফিসার হিসেবে স্বীকৃতি পান। তারা বাহিনীর চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় প্রতি রাতে মিটিং করতেন। আমি সেসব মিটিয়ে উপস্থিত থাকতাম না। আমি মিটিংয়ে অংশ নেওয়া অফিসারদের নিষেধ করতাম, যেন পরবর্তীতে এসব মিটিংয়ে তারা আর না যান। কিন্তু তারা আমার কথা শুনতেন না।

তিনি বলেন, সততা ও দক্ষতার কারণে আইজিপি হিসেবে আমাকে নিয়োগ প্রদান করেন। পুলিশ বাহিনীর সুনাম ও অফিসারদের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব আড়ালে রাখার স্বার্থে আমাকে পরবর্তীতে দুইবার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রথম দফায় আমি রাজি থাকলেও দ্বিতীয়বার আমি বলেছিলাম, আমার পরের ব্যাচ থেকে আইজিপি নিয়োগ দিতে। আমি রাজি ছিলাম না। আমি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের কাছে মৌখিকভাবে এই অনাগ্রহের কথা জানাই। কিন্তু গ্রুপিং আড়ালে রাখতে আমাকে দ্বিতীয় বারেও এক্সটেনশন (বর্ধিত) দেওয়া হয়।



banner close
banner close