বুধবার

১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২ পৌষ, ১৪৩২

রাজধানীর গুলশানে ফ্ল্যাট নিয়ে প্রতারণা; ক্ষমতার দাপট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৫:৫৫

শেয়ার

রাজধানীর গুলশানে ফ্ল্যাট নিয়ে প্রতারণা; ক্ষমতার দাপট
গুলশানে ফ্ল্যাট নিয়ে প্রতারণা

ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানে এক পরিবারের সঙ্গে প্রতারণা ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সাগরদীপা গুহ রায় নামের এক নারী দীর্ঘদিন ধরে নিজের কেনা ফ্ল্যাট এবং এক কোটি টাকা ফেরতের জন্য ঘুরছেন বিভিন্ন দপ্তরে। কিন্তু প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠীর দৌরাত্ম্যে তিনি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

সাগরদীপা জানান, ২০০২ সালে গুলশানের ১২৪ নম্বর সড়কের একটি ফ্ল্যাট তিনি কিনে সেখানে বসবাস শুরু করেন। সেই থেকে তিনি নিয়মিত বিদ্যুৎ, গ্যাস সিটি করপোরেশনের কর পরিশোধ করে আসছিলেন। ২০০৮ সালে সরকারি বাসায় উঠলে ওই ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেন।

২০১৬ সালে ফ্ল্যাটটি বিক্রির জন্য তিনি বিএনএস গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এএলজেড গ্রুপের সঙ্গে এক কোটি ২৭ লাখ টাকার চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী, কোম্পানি তাকে নগদ ২৭ লাখ টাকা দেয়। পরবর্তীতে দেখা যায় একটি অজ্ঞাত পরিবার ওই ফ্লাটটিতে বসবাস শুরু করেছে।

সাগরদীপা অভিযোগ করেন, তিনি যখন নতুন ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন করতে যান, তখন জানতে পারেন ফ্ল্যাটটি আব্দুল মান্নান তালুকদারের নামে রয়েছে। এভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে তিনি নিজের পুরনো ফ্ল্যাট এক কোটি টাকা হারান।

এরপর বিষয়টি নিয়ে গুলশান থানায় একাধিকবার সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি। কিন্তু তার অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ডিআইজি হাসিব আজিজ তার আত্মীয় সংসদ সদস্য এনামুল হক শামীমের প্রভাবে পুলিশ ন্যায়বিচার না করে উল্টো তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে।

সাগরদীপা আরো বলেন, “আমি যখন আমার ফ্ল্যাটে প্রবেশ করতে যাই, তখন প্রতারকরা আমাকে থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে ডাকাতি চুরির মিথ্যা মামলার ভয় দেখায়। ওসির সামনে জোর করে আমাকে মুচলেকা দিতে বাধ্য করে। এমনকি আমার করা জিডিও একই দিনে তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়।

তিনি আরও জানান, প্রতারক দলের সঙ্গে লিপ্ত মোয়াজ্জেম হোসেন নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তার ফ্ল্যাট দখল করে রেখেছে। সময় তাকে এবং তার সন্তানদের নানা হুমকি মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।

যদিও পরে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিএনএস গ্রুপ কিছু টাকা ফেরত দেয়, কিন্তু ফ্ল্যাটটি এখনও ফেরত মেলেনি।

ঘটনায় সাগরদীপা গুহ রায় বলেন, “আমি চাই শুধু ন্যায়বিচার। আমার ফ্ল্যাটটি ফেরত এবং প্রতারণায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি হোক। আমি আমার দুই সন্তানকে নিয়ে ভয়ের মধ্যে নয়, সুস্থতার সঙ্গে বাঁচতে চাই।

ভুক্তভোগীর দাবি, তার কাছে সব কাগজপত্র প্রমাণপত্র রয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার দাপটে ন্যায়বিচার আটকে আছে। নতুন বাংলাদেশে তিনি পুলিশের কাছে ভরসা রেখেই সুবিচার প্রত্যাশা করছেন।

এদিকে অভিযুক্ত প্রতারকদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের পাওয়া যায়নি৷

এবিষয়ে গুলশান থানার বর্তমান অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত৷ দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।



banner close
banner close