বৃহস্পতিবার

১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩ পৌষ, ১৪৩২

সাংবাদিক মুক্তাদির রশিদদের হাত ধরেই ফিরছেন মনিরুল-বিপ্লবরা

মোঃ আল আমিন

প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৩:১৫

আপডেট: ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৩:১৫

শেয়ার

সাংবাদিক মুক্তাদির রশিদদের হাত ধরেই ফিরছেন মনিরুল-বিপ্লবরা
ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক মুক্তাদির রশিদদের হাত ধরেই ফিরছেন মনিরুল-বিপ্লবরা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবিদার অনেকেই এখন ভোল পাল্টে ফেলেছেন। কেউ কেউ নিজেকে তুলে ধরছেন নিরপেক্ষ হিসেবে। আর কেউ কেউ সেক্যুলার। তবে বাস্তবতা হলো এরা প্রায় সবাই মুখোশধারী ফ্যাসিবাদের দোসর।

তেমনই মুখোশধারী একজনের নাম সাংবাদিক মুক্তাদির রশিদ রোমিও। সাংবাদিকতা করেন। তবে সেই সাংবাদিকতাও এজেন্ডা ধরে।

পলাতক শেখ হাসিনার বহু ঘনিষ্ঠ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন মুক্তাদির রশিদ। যাদের সঙ্গে মুক্তাদির রশিদের নিয়মিত যোগাযোগ তারাও অবশ্য দেশে নেই। হাসিনার পর পালিয়েছেন তারাও।

এদের মধ্যে অন্যতম আলোচিত দুই পলাতক পুলিশ কর্মকর্তা, মনিরুল ইসলাম এবং বিপ্লব কুমার সরকার। তারা শেখ হাসিনার শাসনামলে বিভিন্ন অপকর্মে সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মনিরুল ও বিপ্লব কুমারের সঙ্গে এখন ফেসবুকে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন সাংবাদিক মুক্তাদির রশিদ রোমিও।

মুক্তাদির রশিদ অবশ্য নানা সময়ে বিতর্কিত পোস্টের জন্য পরিচিত। তার সঙ্গেই সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে পলাতক দুই পুলিশের সঙ্গে ফেসবুকে কথোপকথন। দুই কর্মকর্তার তীর্যক মন্তব্যে সায় দিচ্ছেন মুক্তাদির রশিদ ।

আপস

সম্প্রতি, বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা ও এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর মধ্যে রাজনৈতিক তিক্ততা সৃষ্টি হয়। রুমিন ফারহানা হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তাদির রশিদ একটি ফেসবুক পোস্ট দেন। ওই পোস্টে মনিরুল ইসলামও নেতিবাচক মন্তব্য করেন এবং মুক্তাদির রশিদ সেটাতে সায় দেন।

এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, মুক্তাদির রশিদ তার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে পলাতক পুলিশ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক অবস্থান এবং সম্পর্ক নিয়ে আরও কিছুটা ধারালো আলোচনার সুযোগ করে দিচ্ছেন।

এর পেছনে অবশ্য আরও একটি গভীর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। লন্ডনে বসবাসকারী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের, লন্ডনে প্রেস মিনিস্টার পদে রোমিওর নাম সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার সেই সুপারিশ গ্রহণ করেনি। এরপর থেকেই রোমিও সরকারের প্রতি তীব্র সমালোচনা শুরু করেন, যা অনেকটা প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব প্রকাশ করে। এই পরিবর্তনের ফলে, বিএনপির প্রতি তার আগ্রহও বেড়ে যায় এবং সম্প্রতি, বিএনপির একটি অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের উপস্থিতিতে মুক্তাদির রশিদ বক্তব্য রাখেন।

মুক্তাদির রশিদ বক্তব্যের মধ্যে একটি ষড়যন্ত্রমূলক বাচনভঙ্গি ফুটে ওঠে, যেখানে তিনি ড. ইউনূসের জীবনের শঙ্কা নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করেন। এসব বক্তব্য রাজনৈতিক এবং সামাজিক মহলে প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে।

এ ছাড়া মুক্তাদির রশিদ সমর্থন বিএনপির বিতর্কিত নেতা ফজলুর রহমানের পক্ষে প্রকাশ পেয়েছে। 'স্ট্যান্ড উইথ ফজলুর রহমান' শীর্ষক পোস্টটি তার ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে।

এদিকে, একাধিক সংবাদিকের মতে, মুক্তাদির রশিদ শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিদেশি দূতাবাসের সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। এর ফলে, তার কথাবার্তা এবং কর্মকাণ্ডে দেশের এবং আন্তর্জাতিক এজেন্ডা স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যা মুক্তাদির রশিদ রাজনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থানকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করে।

সম্প্রতি স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমে তার একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে হামলার পরিকল্পনা। যদিও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন হিসেবে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র অথবা বাংলাদেশ সরকার কেউই কখনো হামলার পরিকল্পনার দাবি করেনি। কোনো সূত্র থেকে নিশ্চিত করা না হলেও ঢাউস আকৃতির এ প্রতিবেদন সাইটে জ্বলজ্বল করছে। অপসাংবাদিকতার এমন উদাহরণ কমই পাওয়া যায়।

ভিডিও লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=tBCXK3v-OZw



banner close
banner close