রবিবার

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

বাংলা এডিশন টিমের পরিচয় ও নিবন্ধন জানতে চাইলো জুলাই হত্যা মামলার আসামির ছেলে

মোঃ আল আমিন

প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৪১

আপডেট: ৩০ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৪৭

শেয়ার

বাংলা এডিশন টিমের পরিচয় ও নিবন্ধন জানতে চাইলো জুলাই হত্যা মামলার আসামির ছেলে
ছবি: বাংলা এডিশন

মাদারীপুরে ক্রয়সূত্রে জমির মালিক আব্দুল্লাহ আল-মামুন। প্রায় এক বছর আগে শিবচর উপজেলার কুতুবপুর এলাকার বাসিন্দা লতিফ হাওলাদারের কাছ থেকে জমিটি কেনেন তিনি।

অভিযোগ ওঠেছে ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা শাজাহান হাওলাদারের কাছে এই জমি বিক্রি না করায় জমির আগের মালিক লতিফ হাওলাদার ও বর্তমান মালিন আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন তিনি।

লতিফের ছেলে নাছির হাওলাদার বাংলা এডিশনকে জানান, জমি বেচার সময় শাজাহান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ক্রেতাকে তাকে জমি নেয়ার কথা বললেন অস্বীকৃতি জানান। জমি কেনা বেচার প্রায় দেড় মাস পরে কোর্টে গিয়ে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন নাছির।

এছাড়াও শাজাহান তাদের গাছ কেটে জমি দখল করে দেয়াল নির্মাণ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সরেজমিনে গেলে নাছির অভিযোগের সত্যতাও পায় বাংলা এডিশন টিম। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, লতিফের জমির গাছ কেটে দেয়াল নির্মাণ করছেন শাজাহান। গাছগুলো কেটে রেখেছেন নিজের বাড়িতেই।

লতিফের মেয়ে বলছেন, তার বাবাকে বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকিও দিয়েছেন শাজাহান।

এসব বিষয়ে স্থানীয়রা বলছেন, প্রধান সড়কের সাথে জমিটি কেনাবেচা থেকে শুরু করে সারভেয়ার মাপাঝোক এবং রেজিস্ট্রি করার সময়ও উপস্থিত ছিলেন শাজাহান। বাড়ির পাশে জমি হওয়ায় কেনাবেচা থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রি পর্যন্ত প্রতিক্ষেত্রে তাকে জমিটি নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তবে তাতে সাড়া দেননি তিনি। পরবর্তীতে জমি কেনার জন্য কোর্টে গিয়ে দাখিলা বা না রাজি দেয় এবং আগের মালিক লতিফ এবং বর্তমান মালিক আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নামে দায়ের করেছে মিথ্যা মামলা।

ওই মামলায় স্থানীয় ইউপি সদস্য রাসেল মিয়াকে সাক্ষী করা হয়েছে। অথচ তিনি জানেনই না তাকে এই মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে। জন্য মামলার বাদী জবাবদিহি করতে বলা হলেও তিনি কোনো জবাব দিতি পারেননি।

এবিষয়ে জানতে শাজাহানের বাংলা মুখোমুখি হয়েছে এডিশন টিম। তবে প্রশ্ন করতেই ক্ষেপে যান তিনি।

এ সময় পরিচয় জানতে চেয়ে বাংলা এডিশনের টিমের কাছে প্রথমে ভিজিটিং কার্ড চায় তার ছেলে। এরপর আইডি কার্ডও হাতে নিয়ে পরখ করে দেখতে চান। এমনকি পুরো ঘটনা মুঠোফোনে ভিডিও করেও রাখেন। এমনকি সরকারী নিবন্ধন আছে কিনা সেটিও জানতে চায় শাজাহানের ছেলে।

একপর্যায়ে আশ্বস্ত হয়ে, রাজি হন কথা বলতে। তিনি দাবি করেন, ওই প্লটে তাদেরও জমি রয়েছে। বিক্রি করা জমি তার প্রয়োজন তবে তাকে না জানিয়ে বিক্রি করায় কোর্টে গিয়ে না রাজি এবং মামলা করেছেন।

এমনকি জমি মাপা ও রেজিস্ট্রির সময় তার উপস্থিতির বিষয়টিও প্রথমে অস্বীকার করেছেন। অথচ ভিডিওতে দেখা গেছে তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে স্বীকার করে বলেন, ওই দিন মূলত কিছু তথ্য জনাতে হাজির ছিলেন তিনি।

বাংলা এডিশন টিমের কাছে তিনি দাবি করেন, জমিটি বিক্রি হওয়ায় তার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কোথাও বের হতে পারেন না। বাংলা এডিশন টিম সরেজমিনে গিয়ে এ কথা কোনো সত্যতা পায়নি। সেখানে দেখা গেছে, তার বাড়ির সামনে দিয়ে ইটের সোলিং এর একটি পাকা রাস্তা রয়েছে। এমনকি বিক্রি হওয়া জমির ওপর দিয়ে কোনো রাস্তা নেই। সেখানে রয়েছে জলাবদ্ধতা এবং ফসলি খেত।

স্থানীয়াদের অভিযোগ, শাজাহানের নিজ ভাইদের সাথেও সম্পর্ক ভালো না। জমি-জমা নিয়ে ভাইদের মধ্যেও রয়েছে ঝামেলা।

এদিকে, জুলাই হত্যা মামলার একটি কপি বাংলা এডিশনের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ৪২৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো চারশো থেকে পাঁচশো জনের নামে মোহাম্মাদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেখানে ৩২৬ নাম্বারে এই শাজাহান হাওলাদারের নামও রয়েছে।

এনিয়ে স্থানীয়রা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, জুলাই হত্যা মামলার আসামী হয়েও দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছেন এই মামলাবাজ শাহজাহান। মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে করছেন হয়রানি। তাই এই মামলাবাজ শাজাহান হাওলাদারকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

ভিডিও লিংখ: https://www.youtube.com/watch?v=Vo7aRyJDsow



banner close
banner close