সোমবার

১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত পরাজয় মোদীর, বাধ্য হয়েই বাড়ালেন মেডিক্যাল ভিসা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট, ২০২৫ ১৪:৩৭

আপডেট: ২৩ আগস্ট, ২০২৫ ১৪:৫০

শেয়ার

ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত পরাজয় মোদীর, বাধ্য হয়েই বাড়ালেন মেডিক্যাল ভিসা
ছবি: কোলাজ

স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বেশ গুরুত্ব পেয়েছে ভাটির এই দেশটি। শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, আটলান্টিকের ওপারেও দেশ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে হরহামেশাই। হোয়াইট হাউজ কিংবা পেন্টাগনের মতো জায়গায় যখন নিয়মিত বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠে আসছে, তখনই বোঝা যায় বিশ্ব দরবারে দেশটি ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫৩ বছরের বাংলাদেশ তার সার্বভৌমত্বের ক্ষমতা পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারেনি। বিশেষ করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ দেখেছে এক নতজানু পররাষ্ট্রনীতি। নীতি শিখিয়েছে কীভাবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের গোলামী করতে হয়। একের পর এক দেশবিরোধী চুক্তি করে দেশের স্বাধীনতাকে চরমভাবে খর্ব করারও অভিযোগ রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে।।

২০২৪ সালের আগস্ট এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ যেদিন বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। এই দিনটি শুধু গণতন্ত্রের নব দিগন্তই উন্মোচন করেনি, সুযোগ করে দিয়েছে দিল্লীর দাসত্ব থেকে মুক্তির পথও।

হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নিজেদের কর্তৃত্ব হারিয়েছে ভারত। হারিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র বন্ধু রাষ্ট্রকেও। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে পারেনি নয়া দিল্লি। তাই বাংলাদেশকে জব্দ করতে ভারত কখনো দিয়েছে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, আবার কখনো বন্ধ করেছে মেডিক্যাল ভিসা। আর গোদী মিডিয়ার এসব খবর ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে প্রচার করে নিজেদের দাদাগিরি জাহির করার চেষ্টাও করেছে।

তবে মেডিক্যাল ভিসা বন্ধ করে হিতে বিপরীত হয়েছে ভারতেরই। এক্ষেত্রে বন্ধুর মতো হাত বাড়িয়েছে চীন। বাংলাদেশি রোগীদের জন্য কুনমিং প্রদেশে কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতালে বিশেষ সেবা চালু করেছে চীন সরকার। প্রদেশটি থেকে ঢাকা থেকে খুব বেশি দূরে নয়। আবার সেবা নিতেও রাখা হয়েছে স্বল্প খরচের ব্যবস্থাও। এরইমধ্যে রোগীদের যাতায়াতে শুরু হয়েছে ঢাকা-কুনমিং ফ্লাইটও। এছাড়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম-কুনমিং রুটেও বিমান চলাচল শুরু হবে বলেও জানা গেছে।

চীনে বাংলাদেশিদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ খাবারের সমস্যা। খাদ্যাভ্যাসের ভিন্নতার কারণে প্রায়ই সমস্যায় পড়তে হয় চীনে অবস্থান করা বাংলাদেশী নাগরিকদের। এই বিষয়টি মাথায় রেখে কুনমিংয়ে যাওয়া রোগীদের জন্য বাঙালী খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানকার হাসপাতাল আশপাশের রেস্তোরাগুলোতে। এতে স্বস্তি মিলেছে সেখানে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের।

হাড়, চোখ এবং ক্যান্সারের চিকিৎসায় বেশ সুনাম রয়েছে কুনমিংয়ের হাসপাতালগুলোতে। অন্যদিকে সেখানকার চিকিৎসা খরচও ভারতের তুলনায় কম। সম্প্রতি চীন থেকে হার্টের চিকিৎসা করিয়ে এসেছেন কয়েকজন বাংলাদেশি। তারা বলছেন, বিমানভাড়া বাদে মাত্র এক হাজার ডলার খরচ হয়েছে তাদের।

খাবার আবাসনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা দিতে কুনমিংয়ে কয়েকটি সহায়তা প্রতিষ্ঠান চালু করেছে সেখানে বসবাস করা বাংলাদেশিরা। রোগীর সংখ্যা বাড়ায় দ্রুত ভিসা দিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে চীন সরকার।

অন্যদিকে বাংলাদেশী রোগীরা না যাওয়ায় চরম মন্দা পার করছে কলকাতার ব্যবসায়ীরা। সেখানকার নিউ মার্কেট এলাকার শত শত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ছিল যেখানে মূল ক্রেতা ছিল বাংলাদেশীরা। তবে বাংলাদেশীদের মেডিকেল ভিসা বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছে সেসব ব্যবসায়ীরা। যেন বাংলাদেশকে জব্দ করতে গিয়ে ভারতই চূড়ান্তভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়লো।

তাই তো বাংলাদেশীদের জন্য মেডিকেল ভিসা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের সিদ্ধান্ত ইউনূস সরকারের কাছে মোদি সরকারের এক লজ্জাজনক পয়ারজয়কে নির্দেশ করে। কারণ ভারত ভেবেছিলো বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলতে। অথচ হলো তার ঠিক উল্টোটি। যেন নিজের খোঁড়া গর্তে নিজেই পড়লো ভারত। বাংলাদেশের কাছে গো-হারা হেরে এখন অনেকটাই লেজে-গোবরে অবস্থা তাদের।

অন্যদিকে বাংলাদেশি রোগীরা না যাওয়ায় চরম বিপাকে ভারত। কলকতার নিউ মার্কেট এলাকার শত শত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ছিল যেখানে মূল ক্রেতা ছিল বাংলাদেশিরা। তবে দীর্ঘদিন মেডিকেল ভিসা বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন সেখানাকর ব্যবসায়ীরা। যেন বাংলাদেশকে জব্দ করতে গিয়ে ভারতই চূড়ান্তভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়লো।

এই পরিস্থিতি বাংলাদেশীদের জন্য মেডিকেল ভিসা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের সিদ্ধান্ত ইউনূস সরকারের কাছে মোদী সরকারের এক লজ্জাজনক পয়ারজয় হয়েছে। বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে চিকিৎসার বাজার হারাতে বসেছে ভারত। কারণ, প্রতি বছর ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করাতে প্রায় হাজার কোটি টাকা খরচ করে বাংলাদেশি রোগীরা।

ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্যা বলছে, প্রতি বছরে বাংলাদেশ থেকে ২৫ লাখের মতো রোগী ভারত যায়। স্বাস্থ্যসেবা নিতে তাদের ব্যয় হয়ে থাকে প্রায় ৫০ কোটি ডলার। গত বছর জুনে প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, একক দেশ হিসেবে ভারতেই ক্রেডিট কার্ডে সবচেয়ে বেশি খরচ করে বাংলাদেশিরা। এমনকি দেশের বাইরে ক্রেডিট কার্ডে মোট খরচের চার ভাগের এক ভাগ হয় ভারতে। সবমিলিয়ে নিজেদের বিরাট আর্থিক ক্ষতি কাটাতে এবং চীনে যাওয়া রোগীদের কাছে টানতে মেডিক্যাল ভিসা বাড়িয়েছে ভারত, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিস্তারিত ভিডিও লিংকে: https://www.youtube.com/watch?v=u7SWZEg4FEc&t=4s



banner close
banner close