জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আগে-পরের নানা বিষয় নিয়ে গত ২৯ জুলাই প্রথম আলোর সাথে কথা বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি সেলিম জাহিদকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মীর্জা ফখরুল বলেন, দেশের রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থীদের উত্থান হচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ বাংলাদেশকে সব সময় উদারপন্থী গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দেখতে চাই। সেই জায়গায় যদি এমন এমন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান হয়, যারা গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না। তারা নিজেরা জোর করে চাপিয়ে দিতে চায় মতবাদকে, এটা নিঃসন্দেহে এলার্মিং সিচুয়েশন। দেশে এসব দলের উত্থান হলে, পিছিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো পথ থাকবে না।’
গত ২১ আগস্ট জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যেও ফখরুল বলেন, ‘দেশে নতুন করে উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, যা রুখে দেয়া না গেলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।’
মির্জা ফখরুল দক্ষিনপন্থী ও উগ্রবাদ বলতে আসলে কি বুঝিয়েছেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা সমালোচনা। রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, মীর্জা ফখরুল উগ্রবাদ ও দক্ষিনপন্থী বলতে ইসলাম ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝিয়েছেন।
সম্প্রতি ইসলাম ধর্মভিত্তিক দুইটি রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ ও ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেছে। এরপরই বিএনপির শীর্ষ নেতার করা মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে দেশের রাজনীতিতে।
মির্জা ফখরুল ফ্যাসিস্ট হাসিনার সুরে কথা বলে ইসলামী দলগুলোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে। এর আগে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ইসলামী দল ও ধর্মভীরু মুসলমানদের জঙ্গি তকমা দিয়ে দমন পীড়ন করতো, একইভাবে মির্জা ফখরুল তাদের দমন করতে চাইছে বলে মনে করছেন ধর্মীয় নেতারা। এমনকি অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া ধর্মীয় দলগুলোর অবদানও অস্বীকার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।
এদিকে বিএনপি মহাসচিব ভারতের সুরে কথা বলছে বলেও মন্তব্য করেছে অনেকে। গণুভ্যুত্থানের পরপরই ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে একই মন্তব্য করেছিলেন। এ ছাড়া তিনি জুলাই-আগস্টের আন্দোলনকারীদেরও উগ্রবাদি আখ্যা দিয়েছেন। বর্তমানে ভারতীয় কিছু মিডিয়া বাংলাদেশ নিয়ে বিভ্রান্তমূলক সংবাদ প্রচার করে উগ্রবাদী-মৌলবাদী ন্যারেটিভ তৈরি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভারতের সাথে একযোগে বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যমও পশ্চিমাবিশ্বকে বোঝাতে চেষ্টা করছে বাংলাদেশে উগ্রবাদের উত্থান হয়েছে। বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করতে যেভাবে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার কাজ করতো। এখনো সেই অপ-তৎপরতা চলামান রয়েছে বলেও অভিযোগ আছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একদিকে ফখরুল ইসলাম ভারতের সুরে কথা বলছে, অন্যদিকে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার ভারতের সুরে বাংলাদেশের রাজনীতিবীদদের কথা বলাচ্ছে। প্রথম আলোর সাংবাদিক সেলিম জাহিদ মীর্জা ফখরুলকে প্রশ্ন করেছেন, ‘আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পর দেশের রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থীদের উত্থান হতে যাচ্ছে কিনা? বিষয়টি বিএনপির মহাসচিব কিভাবে দেখেন?’
সাংবাদিকের প্রশ্নের মধ্যেই দক্ষিনপন্থী শব্দটির ব্যবহার প্রথমে করা হয়েছে। যেকারণে অনেকের ধারণা প্রথম আলো খুবই চতুরতার সাথে এখনো ভারত ও আওয়ামীলীগের পক্ষে থেকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত রয়েছে।
বিস্তারিত ভিডিও লিংকে: https://www.youtube.com/watch?v=7sLx3e4xrTQ
আরও পড়ুন:








