রবিবার

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

আসিফ নজরুলের মুজিবপ্রীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ১০:৫৪

আপডেট: ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ১০:৫৫

শেয়ার

আসিফ নজরুলের মুজিবপ্রীতি
ছবি: সংগৃহীত

এমন একটি সময় ছিল যখন শেখ মুজিবুর রহমানের নামে সকাল-বিকেল জয়ধ্বনি উঠতো। মিডিয়াপাড়ার বেশিরভাগ খবরই থাকতো তাকে নিয়ে। এই নামের বন্দনা করে কেউ হয়েছে এমপি, কেউ মন্ত্রী, আবার কেউবা সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

মুজিবের জন্মদিনে এক শিক্ষক ভুল করে তাঁর প্রতিকৃতিতে বাম হাতে ফুল দিয়েছিলেন। শাস্তিস্বরূপ তাঁকে, চাকরি পর্যন্ত হারাতে হয়েছে। এমন উদাহরণের কথা শুনে নিশ্চয়ই উত্তর কোরিয়ার কথা মনে পড়তে পারে? কারণ সেখানেও রয়েছে এমন অদ্ভুত কিছু নিয়ম। যেমন, দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে কেউ জনসম্মুখে হাসতে পারবে না। কেউ এই নিয়ম ভঙ্গ করলে মৃত্যুদণ্ডও দেয়া হয় তাকে।

তবে, সময় পাল্টেছে। এক সময় যার নামের ওপর ভর করে চলতো ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাজনীতি, এখন সেই নাম বাংলাদেশে অনেকটাই অবাঞ্ছিত। ১৫ আগস্টে এখন কোথাও হয় ডিজে পার্টি, আবার কোথাও চলে পশু জবাই করে আনন্দের ভুঁরিভোজ। কিছু অতিউৎসাহী সাংস্কৃতিক কর্মী মুজিবকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে ভূষিত হয়েছে কালচারাল ফ্যাসিস্ট উপাধিতে, মেকাপ করা স্টাইলিশ ছবিতে পড়েছে জুতাপেটা।

তবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যাবার পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারেও রয়েছে কিছু মুজিবপ্রেমী মানুষ, যারা একসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা বিভিন্ন টেলিভিশন টকশোতে মুজিব বন্দনায় ব্যস্ত থাকতো। আইন উপদেষ্টা ডক্টর আসিফ নজরুল তাদেরই একজন। তার ফেসবুক পোস্টে যেমন রয়েছে, মুজিবের প্রতি আবেগ ভালোবাসা, ঠিক তেমনি কখনো কখনো টেলিভিশন টকশোতে এসেও গেয়েছেন মুজিবের গুণগান। সাম্প্রতিক সময়ে এমন বেশ কিছু পোস্ট এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এগুলো দেখে অনেকে তার সমালোচনা করছে, আবার অনেকেই করছে ট্রল।

২০২০ সালের ১৭ মার্চ মুজিবের জন্মদিনে আসিফ তার এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন- মুজিবকে ভালোবাসতে হলে আওয়ামী লীগ করার প্রয়োজন নেই। দরকার শুধু যুক্তিবোধ আর মনুষ্যত্ব। আসিফ নজরুল অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলে তার এই পোস্ট পুনরায় ভাইরাল হয়। সেই পোস্টের কমেন্ট সেকশনে গিয়ে রেজাউল হক নামে একজন লেখেন, আসিফ নজরুল না জন্মালে জাতি সারা জীবন একজন বড় মাপের বহুরূপী মানুষকে মিস করতো। অন্যদিকে শাজাহারুল ইসলাম তৌহিদ নামে একজন কিছুটা ব্যাঙ্গ করে লেখেন, আসিফ নজরুল হয়তো পোস্ট ডিলিট করতে ভুলে গেছে।

এছাড়া ২০১৮ সালের ১৫ আগস্ট আসিফ নজরুলের আরেকটি ফেসবুক পোস্টে মুজিবকে স্বাধীনতার স্থপতি অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন। একইসাথে মুজিব তার পরিবারের মাগফেরাতও কামনা করেন তিনি।

এর আগে, দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন টকশোতে মুজিবেরঅসমাপ্ত আত্মজীবনীবইয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে দেখা গেছে আসিফকে। আফসোস করে তিনি বলেন, মুজিবের মতো এত বড় একজন নেতা বাংলাদেশে জন্ম নিয়েছে, বইটি প্রকাশের আগে মানুষ তা বুঝতেই পারেনি।

বইটিতে কিছু ঘটনা তুলে ধরা আছে, যা মুজিব না লিখলে অন্য কারো পক্ষে লেখা সম্ভব ছিলো না বলেও মনে করেন আইন উপদেষ্টা।

তার এসব মন্তব্য পুরোনো হলেও, নতুন করে নেটিজেনরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকে আবার এসব পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে ট্রলও করছেন। মূলত দেশের একটি বেসরকারি চ্যানেলের খবরে মুজিবেরঅসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখক নিয়ে করা খবরের পর আলোচনায় এসেছেন আসিফ নজরুলও।

ভিডিও লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=4GvALafzYcU&t=15s



banner close
banner close