রবিবার

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

রাজধানীজুড়ে মিটার বানিজ্য; পানের অযোগ্য পানি সরবরাহ ওয়াসার

মুনতাসির তাসরিপ

প্রকাশিত: ১৩ আগস্ট, ২০২৫ ১২:০৩

শেয়ার

রাজধানীজুড়ে মিটার বানিজ্য; পানের অযোগ্য পানি সরবরাহ ওয়াসার
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর খিলগাও এলাকা থেকে বাংলা এডিশন-এর নম্বরে কল করে একজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন মাঝেমধ্যেই তাদের এলাকার মানুষের পানির বিল অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে৷ সেই সাথে ওয়াসার কিছু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অনেকের বিল নাকি অস্বাভাবিকভাবে কমানোও হচ্ছে৷

ওই ফোন কলের প্রেক্ষিতে বাংলা এডিশনের অনুসন্ধানী দল হাজির হয় রাজধানীর খিলগাও এর ত্রিমোহনী এলাকায়। সেখানে বেরিয়ে আসতে থাকে ওয়াসার নানা ধরনের অনিয়মের চিত্র৷

এতেকরেই শেষ নয়, ওয়াসার সরবরাহ করা পানি পান করতে পারে না এই এলাকার কোন বাসিন্দা। ব্যবহারর করা যায়না রান্নার কাজেও। দূষিত অস্বাস্থকর পানিতে অসুস্থ হয়ে পরছে অনেকেই। সরেজমিনে দেখা যায়, ত্রিমহনী এলাকার বাসিন্দারা কেউ কেউ বোতল আবার কেউ কেউ কলস ভরে পানি নিয়ে যাচ্ছে নলকূপ থেকে। এনিয়েও তারা পায়নি কোন সমাধান।

ওয়াসার বিরুদ্ধে পুরাতন এই অভিযোগের ফুলঝুরি যখন বাংলা এডিশনের ক্যামেরায় রেকর্ড হচ্ছিলো ঠিক তখনই নতুন আরেক অভিযোগ নিয়ে হাজির জহিরুল ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগী৷

জহুরুলের দাবি ওয়াসার পুরাতন দূর্নীতির সাথে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে৷ বাড়তি পানির বিল কমাতে সবাইকে বাধ্য করা হচ্ছে নতুন পাইপ এবং মিটার কিনতে কিন্তু সেখানেও গ্রাহকদের পকেট কাটার অভিযোগ করেছেন ওয়াসার বিরুদ্ধে৷

জহিরুলের এরকম অভিযোগের সত্যতা প্রমান করতে জহিরুল ওয়াসার বিলিং অফিসার মনিরুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করেন। আর তাতেই সবকিছু পরিস্কার হয়ে যায়৷

শুধু জহিরই নয়, ওই এলাকার বহু মানুষ জানান তারা একপ্রকার ওয়াসার কাছে জিম্মি৷ ওয়াসার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কয়েক দফা জানিয়েও কোন কাজ হয়নি৷

এলাকার মানুষের অভিযোগ ওয়াসার উচ্চ পদস্থ অনেক কর্মকর্তাও জড়িয়ে পড়েছেন ঘুষ বানিজ্যে৷ এমন অবিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা জহিরুলকে সাথে নিয়ে স্থানীয় ওয়াসা অফিসে যাই কিন্তু সেখানে গিয়ে ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয় বাংলা এডিশন টিমকে৷ অভিযুক্ত কর্মকর্তা মনিরুল অফিসে আছেন বললেও দারোয়ানরা দাবি করে তিনি অফিসে নেই৷

ফকিরাপুলের পিপিআই রাজস্ব জোন- এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যাবার পর নিরাপত্তা কর্মীরা বাংলা এডিশন টিমের উপর চড়াও হন সেই সাথে তাদেরকে আটকে রাখারও হুমকি দেয়া হয়৷

বাংলা এডিশন টিম অবরুদ্ধ থাকা অবস্থাতেই উপর থেকে আরেক কর্মকর্তা কল করে জহিরুলকে ম্যানেজের চেষ্টা করতে থাকেন৷

তাতেও কাজ নাহলে প্রায় ঘন্টাখানেক বাংলা এডিশনের দুই সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়৷ প্রতিকুল পরিস্থিতিতে ত্রিপল নাইনে কল করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে বাংলা এডিশন টিমকে উদ্ধার করেন তবে অনেক চেষ্টা করেও ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি৷

প্রশ্ন থেকেই যায়, চব্বিশের পাঁচ আগস্ট পরবর্তী নতুন বাংলাদেশেও কেন জিম্মি সাধারণ মানুষ, কেন মুখ বন্ধ করতে চাওয়া হচ্ছে সাংবাদিকদের? আর এমন প্রকাশ্য-দিবালকের দুর্নীতির সম্রাজ্য আদৌ কি বন্ধ হবে?



banner close
banner close