বৃহস্পতিবার

৫ জুন, ২০২৫
২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
৯ , ১৪৪৬

ভাতা বাড়ছে, কমবে নিত্যপণ্যের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩ জুন, ২০২৫ ০৯:৩৭

শেয়ার

ভাতা বাড়ছে, কমবে নিত্যপণ্যের দাম
ভাতা বাড়ছে, কমবে নিত্যপণ্যের দাম

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা . সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল সোমবার এই বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি জানান, বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সম্প্রসারণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর কর কমানো, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ এবং স্বাস্থ্য খাতে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবার জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। যুব উন্নয়ন আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ তহবিল গঠনেও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই উদ্যোগগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি আনবে বলে মনে করছেন অর্থ উপদেষ্টা।

অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তৃতায় জানান, বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা এবং মাথাপিছু বরাদ্দ উভয়ই বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সুবিধাভোগী উপকৃত হবেন। সামাজিক নিরাপত্তার বেষ্টনীর ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে বর্তমানে শতাংশ উৎস কর থেকে .০৫ করা হচ্ছে। এতে করে দাম কমে যাবেধান, গম, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মটরশুঁটি, ছোলা, মসুর ডাল, আদা, হলুদ, শুকনো মরিচ, ডাল, ভুট্টা, মোটা আটা, আটা, লবণ, চিনি, ভোজ্যতেল, কালোজিরা, গোলমরিচ, দারুচিনি, বাদাম, লবঙ্গ, খেজুর, ক্যাসিয়া পাতা, কম্পিউটার কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ এবং সব ধরনের ফলের। সেক্ষেত্রে এসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যা সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির হবে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বয়স্ক ভাতা ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, বিধবা ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, প্রতিবন্ধীদের ভাতা ৮৫০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা, মা শিশু সহায়তা কর্মসূচির ভাতা ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা করা হয়েছে। অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ভাতা ৬৫০ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ভাতা বৃদ্ধির ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং তাদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণে সহায়তা হবে বলে মনে করছেন অর্থ উপদেষ্টা। ছাড়াও, মূল্যস্ফীতির চাপ মোকাবিলায় সাধারণ মানুষের জন্য আরও কিছু পদক্ষেপের কথা প্রস্তাব করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, টিসিবির মাধ্যমে ৫৭ লক্ষ পরিবারকে স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের ভিত্তিতে মসুর ডাল, সয়াবিন তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমার পরিমাণ বাড়বে। আগামী অর্থবছরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মেয়াদ মাসে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বর্তমানে সহায়তাপ্রাপ্ত ৫০ লাখ পরিবারের জন্য বড় স্বস্তি বয়ে আনবে। একই সঙ্গে, আরও লাখ নতুন পরিবারকে এই কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি আরও বাড়াবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আগামী অর্থবছরে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবার অতিরিক্ত হাজার ১৬৬ কোটি টাকা এবং সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির জন্য হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যুব সমাজের শক্তি সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দক্ষ যুবশক্তির আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সারা দেশে সফল যুব উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণের সিলিং বৃদ্ধি করে লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ছাড়া, তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠন করা হবে। ১০ লাখ ৪০ হাজার দুস্থ মহিলাকে মাসে ৩০ কেজি হারে চাল প্রদান করা হচ্ছে।

বাজেটে এসব উদ্যোগের প্রতিক্রিয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে লালবাগের বাসিন্দা শাহজাহান বলেন, আমরা বাজেটের এত বড় অঙ্ক বুঝি না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমবে কি-না সেটা মুখ্য বিষয়। বাজেটে নিত্যপণ্যের দাম কমবে বলে অর্থ উপদেষ্টা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেটা যেন বাস্তবে দেখতে পারি।

banner close
banner close