
২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনা পালানোর পর থেকে রাজধানী ঢাকা পরিণত হয়েছে আন্দোলনের নগরীতে। প্রতিদিনই হচ্ছে কোন না কোন আন্দোলন। যেমন বর্তমানে আবাসন সমস্যা সমাধান ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্প বাস্তবায়নসহ মোট চার দফা দাবিতে আন্দোলন করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নিয়ে রাস্তা বন্ধ করেই আন্দোলন চলছে তাদের। এই আন্দোলনে আবার একাত্মতা প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরাও।
এমনকি শুক্রবারেও বন্ধ নেই আন্দোলন, আজও চলমান দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি। উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তাদের আন্দোলনে এসে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কিছুতেই যেনো আন্দোলন থামাচ্ছে না তারা। অন্যদিকে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচারের দাবীতে আন্দোলন চলমান। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য খুনের ঘটনায় ফুঁসে উঠে পুরো ক্যাম্পাস। সাম্যর হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে হয় আন্দোলন, সাধারণ শিক্ষার্থী ছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
অন্যদিকে আবার ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল এর রায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। তার শপথ গ্রহণে এবং দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে দেরি করায় তার সমর্থকরাও আন্দোলন করছেন নগর ভবনের রাস্তা দখল করেই। ঢাকা শহর জুড়ে এমন অনেক আন্দোলন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কখনো আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিচ্ছে শাহবাগে তো আবার কখনো গুলিস্তানের মত ব্যস্ত জায়গায়। এসবে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি তৈরী হচ্ছে, রাস্তা বন্ধ থাকায় জ্যামের ফাঁদে পড়ছেন অফিসগামীরা।
একদিকে যেমন জনসাধারণের ভোগান্তি রয়েছে এসব আন্দোলনকে ঘিরে তেমনি আবার স্বস্তির জায়গাও রয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ায়। ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিগত ১৬ বছরের শাসনামলে আন্দোলন তো দূরের কথা কেউ কোন আওয়াজ তোলারই সাহস পেতো না। তবে এখন সময় বদলেছে, ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার আন্দোলনকারী প্রত্যেক গোষ্ঠীর কথা শুনছেন আর সমাধানেরও উদ্যোগ নিচ্ছেন।
আন্দোলনকারীরা তাদের আন্দোলনের স্বাধীনতা পেলেও সাধারণ মানুষ এসব আন্দোলনের কারণে পড়ছেন সীমাহীন ভোগান্তিতে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সব রাস্তা বন্ধ করে এসব আন্দোলন হওয়ার কারণে জনসাধারণের দুর্ভোগের শেষ নেই। আন্দোলনকারীদেরও তাই ভাবতে হবে বিষয়টি নিয়ে। রাস্তা বন্ধ না করে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়না এমন কোন জায়গা নির্ধারণ করা উচিৎ আন্দোলনের জন্য, এমনটিই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: