রবিবার

১১ মে, ২০২৫
২৮ বৈশাখ, ১৪৩২
১৩ জিলক্বদ, ১৪৪৬

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৯:০০

আপডেট: ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০৯:৩৪

শেয়ার

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিন সংকটের দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের জন্য বাংলাদেশের অবিচল অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতার অবসানে সিদ্ধান্তমূলক ও সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের একটি বিশেষ অধিবেশনে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সব পক্ষ ও অঞ্চলের বাইরের স্টেকহোল্ডারদের ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতা বন্ধ করার জন্য সিদ্ধান্তমূলক ও সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

ড. ইউনূস তার বক্তৃতায় বলেন, তারা এমন এক সময়ে একত্রিত হয়েছেন যখন অধিকৃত গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ১৪ মাস ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও বর্বর গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এই বর্বরতা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। কম করে বললে, দীর্ঘদিন ধরে মেনে চলা আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি, আইন ও কনভেনশনের প্রতি ইসরায়েলের নির্লজ্জ অবজ্ঞায় আমরা চরম হতাশার মধ্যে আছি।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘লেবাননে যেভাবে বিরোধ ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে আরও এটি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে এবং এটি সমগ্র অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদি পরিণতি বয়ে আনতে পারে, যা কেবল অর্থনীতি নয়, বৈশ্বিক সমাজ ও রাজনীতিকে প্রভাবিত করবে।’

তিনি বলেন, ‘কায়রো থেকে আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই ও বোনদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে, তাদের ইতিহাসের এই অস্তিত্বের সংকটের সময়ে আমাদের ঐক্য ও অটুট অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।’

তিনি বলেন, গাজা, ‘পশ্চিম তীর ও লেবাননে গণহত্যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের শামিল। দায়ীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। এ কারণেই, গত নভেম্বরে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দাড়িয়ে মানবতাবিরোধী জঘন্য অপরাধের দ্রুত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টা একটি কার্যকর দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘জবাবদিহিতার বিষয়ে এই ধরনের কর্মকাণ্ড অপরাধীদেরকে ভবিষ্যতে আরও নৃশংসতা ঘটানোর ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে। মানবিক হস্তক্ষেপ ছাড়াও, গাজা, পশ্চিম তীর ও লেবাননের পুনর্গঠনের চিন্তাভাবনাকে অগ্রাধিকার দেয়ার সময় এসেছে।’

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ‘জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে, ইসরায়েলের বোমা হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ৪০ মিলিয়ন টন ধ্বংসস্তূপ অপসারণ করতে কমপক্ষে ১৫ বছর সময় লাগতে পারে। আমরা ধারণা করতে পারি যে, ধ্বংসস্তূপে ১০ হাজার জনেরও বেশি মৃতদেহ থাকতে পারে। এসব ধ্বংসস্তূপ অ্যাসবেস্টস দ্বারাও দূষিত।’

তিনি ফিলিস্তিন ও লেবাননে পুনর্গঠনের ব্যয়ের আনুমানিক প্রাক্কলনসহ একটি প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য ডি-৮ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ বরাবরই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে দৃঢ়ভাবে পাশে দাড়িয়েছে। আমরা সবসময় ইসরায়েল পরিচালিত অব্যাহত অবৈধ দখলদারিত্ব এবং সহিংস দমন-পীড়নের নিন্দা জানিয়েছি। আমরা এ সংকটের দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে শান্তি ও সম্প্রীতিতে পাশাপাশি বসবাস করার মতো একটি ন্যায্য ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের পক্ষে অটল আছি।’

 

 

 

banner close
banner close